6:08 pm , October 8, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ত্যাগের উন্নয়ন হয়েছে। এই অঞ্চলকে দেশের অন্যতম অর্থনৈতিক জোন তৈরী করার লক্ষ্যে আমরা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছি। বরিশালবাসীর দাবী এখন মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়। সেটাও করা হবে। তবে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর নয়, বরং পৃথক একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হবে বরিশালে। যার অধীনে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর কার্যক্রম পরিচালিত হবে। সেই সাথে এই কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ভবন নির্মান করা হবে।
গতকাল সোমবার বিকাল ৫টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের সুবর্ণ জয়ন্তী’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেছেন। এর পাশাপাশি ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে তিনি শেবামেক এর সুবর্ণ জয়ন্তী’র তিনদিন ব্যাপী অনুষ্ঠান কর্মসূচির উদ্বোধন ঘোষনা করেন।
উপজেলা পর্যায়ের চিকিৎসকদের কর্মস্থলে উপস্থিত থেকে রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য এরই মধ্যে বরিশালের একটি দ্বীপে আমাদের আরো একটি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের মহা পরিকল্পনা রয়েছে। পদ্মার পাড়ে অর্থনৈতিক জোন তৈরি হচ্ছে। পদ্মা সেতু থেকে পটুয়াখালীর কুয়াকাটা পর্যন্ত নির্মিত হচ্ছে চার লেনের রাস্তা। বরিশাল-কুয়াকাটা রুটে এরই মধ্যে নির্মিত হয়েছে শেখ জামাল, শেখ কামাল, শেখ রাসেলসহ ৪টি সেতু।
গণভবনের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করছি রূপপুরে। পরবর্তী যেটা করব সেটা আমার পরিকল্পনা এভাবে আছে যে, বরিশাল অঞ্চলে কয়েকটি দ্বীপ আমরা সার্ভে করেছি। সেখানে একটি দ্বীপ আমরা বেছে নেব, যেখানে নতুন আরেকটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা করব।” এছাড়া শিল্পায়নের জন্য ভোলা থেকে পাইপলাইনের মাধ্যমে বরিশালে গ্যাস নেওয়ার সম্ভাব্যতা যাচাইও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “দেশের দক্ষিণাঞ্চল ছিল সবচেয়ে অবহেলিত। না রাস্তাঘাট, স্কুল-কলেজ, না কোনো কিছু। বরিশালকে একসময় বলা হত বাংলার ভেনিস, সে গৌরবও হারিয়ে গিয়েছিল। সম্পূর্ণ অবহেলিত অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল গোটা দক্ষিণাঞ্চল।
তিনি বলেন, জাতির জনক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে দেশ অনেক পিছিয়ে পড়েছিলো। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশ উন্নতির দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের লক্ষ্যে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নয়নশীল দেশ। তাই আসন্ন নির্বাচনে পুনরায় আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিশেষ অতিথি হিসেবে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক-এমপি ও মন্ত্রনালয়ের সচিববৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। তাছাড়া বরিশাল প্রান্তে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম-এমপি, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, বরিশাল-২ আসনের এমপি এ্যাড. তালুকদার মো. ইউনুস ও বরিশাল-৫ আসনের এমপি জেবুন্নেছা আফরোজ।
এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএমএ কেন্দ্রিয় কমিটির সভাপতি প্রফেসর ডাঃ মোস্তফা জামাল মহিউদ্দিন, মহাসচিব অধ্যাপক ডাঃ এহেতেশামুল হক দুলাল, বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ডাঃ শরফুদ্দিন আহম্মেদ, বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শাহান আরা আবদুল¬াহ, বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস, বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান প্রমুখ।
এর আগে সকালে সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে এক বর্ণাঢ্য র্যালী বের করা হয়। র্যালিটি মেডিকেল কলেজ চত্ত্বর থেকে শুরু করে বান্দ রোড প্রদক্ষিণ করে। র্যালী শেষে ক্যাম্পাস চত্ত্বরে স্মৃতি স্তম্ভর উদ্বোধন করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠান কর্মসূচি পালন করা হয়েছে সুবর্ণ জয়ন্তীকে ঘিরে।