কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে নগরী রক্ষার বাঁধ নির্মান কাজ শুরু ডিসেম্বরে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে নগরী রক্ষার বাঁধ নির্মান কাজ শুরু ডিসেম্বরে - ajkerparibartan.com
কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে নগরী রক্ষার বাঁধ নির্মান কাজ শুরু ডিসেম্বরে

6:00 pm , September 25, 2018

মর্তুজা জুয়েল ॥ সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষে চলতি বছরেই শুরু হচ্ছে কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়ন ও সিটি কর্পোরেশন এলাকা রক্ষায় ৩৩১ কেটি টাকার বাঁধ দেয়ার উন্নয়ন প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে শহর রক্ষায় বরিশালে বৃহৎ প্রকল্পের বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। একই সাথে বরিশাল সদর উপজেলার বাসিন্দাদের কয়েক যুগের প্রত্যাশা পূরন হতে চলেছে। আগামী ডিসেস্বরের পূর্বেই শুরু হবে প্রকল্পের মূল কাজ। আগামী ৩ বছরের মধ্যে প্রকল্প’র কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নির্ধারিন করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান জানিয়েছেন, বৃহৎ এ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য পানি সম্পদ মন্ত্রনালয় ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী একটি সমঝোতা ¯œারক স্বাক্ষর হয়েছে। নৌ বাহিনী পরিচালিত খুলনা শিপইয়ার্ড এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ইতিমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও খূলনা শিপইয়ার্ড একাধিকবার এ বিষয়ে বৈঠক করেছে। প্রকল্পের বাস্তবায়নে অনুমোদনকৃত ডেভলপমেন্ট প্রজেক্ট প্রোফাইল (ডিপিপি) অনুযায়ী খুলনা শিপইয়ার্ড কাজটি সম্পন্ন করার লক্ষ্যে সম্মত হয়েছে। খুলনা শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কমোডর. আনিসুর রহমান মোল্লা জানিয়েছেন মন্ত্রনালয়ের সঙ্গে চুক্তি হওয়ার পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের সঙ্গে আমরা ইতিমধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিষয়ে আলোচনা করেছি। কীর্তনখোলা নদী এখনোও ভাঙ্গন প্রবন অবস্থায় রয়েছে তাই খুব শিঘ্রই ভাঙ্গন রোধে আমরা প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ শুরু করবো। কাজ শুরু করতে আমরা সকল দাপ্তরিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরিশাল কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু সাইদ জানান, আগামী ৩ বছরের মধ্যে কাজ সম্পন্নের লক্ষ্য নির্ধারন করা হয়েছে। সদর উপজেলার চরবাড়িয়া এবং সিটি কর্পোরেশনের বেলতলা এলাকা এ উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। প্রকল্পেরে আওতায় বেলতলা সার্ফেস ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট, ২৩০ কেভি বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন, বেলতলা ফেরীঘাট এলাকা, চরবাড়ীয়া এলাকার বেসরকারী ভূমি, কৃষি ভুমি, সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহ বিভিন্ন স্থাপনা কীর্তনখোলা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষা পাবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে আনুমানিক প্রায় এক হাজার ৬’শ ৮১ কোটি টাকার সম্পদ রক্ষা পাবে। প্রকল্প এলাকায় মোট ৪ দশমিক ৭০ কিলোমিটার টারমিনেশন সহ নদী তীর সংরক্ষন এবং ৫ দশমিক ৬০ কিলোমিটার নদীতে ড্রেজিং করা হবে। সম্পূর্ন প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৩ শ’ ৩১ কেটি ২৩ লাখ ৯৯ হাজার টাকা। সম্পূর্ন টাকা অনুদান গ্রহনের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকার ইতিমধ্যে বরাদ্দ করেছে। প্রকল্পটির প্রথম বছরে ১ শ’ ১৭ কেটি ৮৪ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, দ্বিতীয় বছরে ১ শ’ ৮ কোটি ২০ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং শেষ বছরে ১শ’ ৫ কোটি ১৮ লাখ ২৪ হাজার টাকা ব্যয় বাবদ বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে কোন মেরামত ছাড়াই অন্তত আগামী ১৫ বছর শতভাগ প্রকল্প এলাকা সুরক্ষা হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রমজান আলী প্রমানিক জানান, প্রকল্পটি অনেক বড় হওয়ায় তা বস্তবায়ন প্রক্রিয়া অনেকটা জটিল ছিল। সকল জটিলতার সমাধান হয়েছে। কাজটি শুরু হওয়া এখন শুধু সময়ের ব্যাপার। ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে সম্পূর্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা বেধে দেয়া হলেও দেরীতে কাজ শুরু হওয়ায় এ মেয়াদ কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে সঠিকভাবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে মানসম্পন্ন ভাবে কাজটি করার লক্ষ্যে মন্ত্রনালয় নৌ বাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করেছে বলেও জানান তিনি।
উল্ল্যেখ্য, ১৯৮০ সাল থেকে কীর্তনখোলা নদীতে সদর উপজেলার বিভিন্ন অংশ বিলীন হতে শুরু করে। নদীতে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের ম চরআবদানী, চর উলালঘুনী, মধ্য চরবাড়িয়া, লামচরী, বেলতলা, চরকাউয়াসহ বিভিন্ন অংশ ভেঙ্গে অন্য প্রান্তে চর জেগে ওঠে। জেগে ওঠা প্রান্ত ভেঙ্গে পুনরায় নদীগেের্ভ বিলীন হয়েছে। কিন্তু নদী ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী কোন বৃহৎ প্রকল্প গ্রহন করা হয়নি। আশির দশক থেকে একাধিকবার প্রকল্প তৈরী করা হলেও কোন জনপ্রতিনিধি তা অনুমোদন করিয়ে কাজটি বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হননি। সে সময়ে গৃহীত ২০ কোটি টাকার প্রকল্প কয়েক ধাপে এসে ৩ শ’ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। সর্বশেষ ডিপিপি ৩৩১ কেটি টাকায় যাওয়ার পর ২০১৭ সালে প্রকল্পটি একনেক অনুমোদন করে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT