6:41 pm , April 25, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সদ্য যোগদানকৃত কর্মচারীদের নিয়োগ এবং যোগদানের বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও পার্বত্য শান্তিচুক্তি বাস্তবায়ন কমিটির মন্ত্রি মর্যাদার আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি। একই সাথে বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন। তাছাড়া ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ের বিষয় নিয়ে তৎকালীন অবসরপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. মু. কামরুল হাসান সেলিম এর বিরুদ্ধে যে অভিযোগ রয়েছে তা তদন্ত করে দেখার জন্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি প্রেরণের নির্দেশও দিয়েছেন। তাছাড়া কোন প্রকার অনুমতি কিংবা পরামর্শ গ্রহন ছাড়াই আদালতের রায় পাওয়া নতুন কর্মচারীদের যোগদান করানো সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ও বর্তমান উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল কাদিরকে ভর্ৎসনার পাশাপাশি মৌখিকভাবে শোকজ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ। গতকাল বুধবার শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ এর কনফারেন্স রুমে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন কমিটির সভায় এই নির্দেশনা দিয়েছেন আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি। এসময় নিজের ভুল স্বীকার করে পার পেয়ে যান উপ-পরিচালক ডা. আব্দুল কাদির।
বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই সভায় সভাপতির বক্তব্যে আলহাজ্ব আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজের উন্নয়নে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা প্রদান করেন। পাশাপাশি রোগীর প্রতি চিকিৎসকদের মননশীল হতে আহ্বান জানিয়ে বলেন, রোগীরা যাতে তাদের সঠিক চিকিৎসা সেবা পেতে পারে সে বিষয়ে সকলকে আন্তরিক হতে হবে।
এদিকে সভার শুরুতে বিগত সভায় গৃহিত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের বিষয়ে পর্যালচনা করা হয়। পাশাপাশি নতুন করে বিভিন্ন সমস্যার কথা তুলে ধরেন হাসপাতালের কর্মকর্তা, কর্মচারী এবং নার্সরা। বিশেষ করে হাসপাতালের রেডিওলজী বিভাগে পরীক্ষা-নিরীক্ষার যন্ত্রপাতি বিকল, বিদ্যুৎ ব্যবস্থা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির স্টাফ কোয়ার্টারের বেহাল অবস্থা, হাসপাতাল চত্ত্বর ও চতুর্থ শ্রেণি স্টাফ কোয়ার্টারের মধ্যে অবৈধ স্থাপনার বিষয় তুলে ধরেন হাসপাতাল পরিচালক। এসব সমস্যা সমাধের জন্য সভাপতির সহযোগিতা চাওয়া হয়।
এসময় সভার সভাপতি ও মন্ত্রী মর্যাদার আবুল হাসনাত আবদুল্লাহ-এমপি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, সদ্য নিয়োগ পেয়ে যারা হাসপাতালে যোগদান করেছে তারা সবাই বরিশাল তথা আমাদেরই সন্তান। তারা যাতে কর্মে যোগদান এবং বেতন ভাতা তুলতে পারে সে বিষয়টি আমাদেরই দেখতে হবে। তবে তার আগে তৎকালীন পরিচালক অধ্যাপক ডা. নিজাম উদ্দিন ফারুকের বিরুদ্ধে নিয়োগ দুর্নীতির যে অভিযোগ উঠেছে তা পর্যালচনার জন্য বলা হয়েছে। সেই সাথে নিয়োগের পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বিভাগীয় কমিশনারকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত দেন আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ-এমপি। পাশাপাশি সাবেক পরিচালক ডা. মু. কামরুল হাসান সেলিম এর বিরুদ্ধে ভারী যন্ত্রপাতি ক্রয়ের যে অভিযোগ ছিলো তার তদন্ত করার জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী। সেই সাথে হাসপাতালে বিদ্যুৎ সমস্যা সমাধানে নতুন আরো একটি বিকল্প সংযোগ স্থাপনের জন্য বিদ্যুৎ বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছেন হাসনাত আবদুল্লাহ।
এছাড়া আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে হাসপাতালের পূর্ব পাশে নির্মানাধীন মর্ডানাইজেশন এন্ড এক্সটেনশন ভবনের নির্মান কাজ সম্পন্ন করে তা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর নির্দেশ দিয়েছেন গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে। স্টাফ কোয়ার্টার গুলো সংস্কারের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গনপূর্ত বিভাগকে নির্দেশনার পাশাপাশি আপাতত ইউজার ফি’র অর্থ দিয়ে বিকল হয়ে থাকা পরীক্ষা-নিরীক্ষার মেশিনারী সচল করে তোলার ব্যবস্থা করতে বলেন হাসানাত আবদুল্লাহ। এছাড়া বিকল হওয়া যন্ত্রগুলোর স্থায়ী সমাধানের জন্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি প্রেরনের জন্য বলেন এবং এ বিষয়ে মন্ত্রনালয়ে জোর সুপারিশ করার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন তিনি।
সভায় অন্যান্যদের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মো. নুরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. আব্দুল বাকির হোসেন, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. ভাস্কর সাহা, উপাধ্যক্ষ ডা. সৈয়দ মাকসুমুল হক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক ডা. এসএম সারওয়ার, মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. মনিরুজ্জামান শাহীন সহ পুলিশ, র্যাব, সমাজসেবা অধিদপ্তর, নার্সিং কর্মকর্তা সহ বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন।