6:05 pm , September 16, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার জট কমছে। মামলা দায়েরের বিপরীতে নিষ্পত্তি বেশী হওয়ায় জট কমতে শুরু করেছে। গত ১২ সেপ্টেম্বর সদ্য বিদায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. গোলাম ফারুকের জেলা জজ পদে পদোন্নতি উপলক্ষে বদলিজনিত বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠান সূত্রে এ তথ্য জানা যায়। উক্ত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভারপ্রাপ্ত চীফ জুডিসিয়াল ও অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. শিহাবুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ নবাবুর রহমান, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ আবু শামীম আজাদ, জন-নিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মহসিনুল হক, অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মারুফ আহমেদ, মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আনিসুর রহমান, শামীম আহমেদ। এছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন, পাবলিক প্রসিকিউটর এড মোঃ গিয়াস উদ্দিন কাবুল, জেলা আইনজীবী সমিতি সভাপতি এড সৈয়দ ওবায়দুল্লাহ সাজু, সাধারন সম্পাদক এড মোঃ সাদিকুর রহমান লিংকন, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নাজির সুমন হাওলাদার, হিসাব রক্ষক তারিকুল ইসলাম, কম্পিউটার অপারেটর শহিদুল হক, স্টানোগ্রাফার মো. শফিকুর রহমান, আব্দুর রাজ্জাক খোকন ও রেকর্ড কিপার মিজানুর রহমানসহ জজশীপের অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারিবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে সভাপতি তার স্বাগত বক্তব্যে জানান, বিদায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ গোলাম ফারুক ২০১৭ সালের ১২ ফেব্রুয়ারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে যোগদান করেন। সিজেএম হিসাবে তার দায়িত্ব পালনকালে রেকর্ডসংখ্যক মামলার নিষ্পত্তি করা হয়। ২০১৭ সালের জানুয়ারী মাসে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে সর্বমোট ৭ হাজার ৪২৭টি মামলা ছিল। চলতি বছরের আগষ্টের শেষে মামলার সংখ্যা দাড়ায় ৫ হাজার ৬১৬টি। সারাদেশে মামলার সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধির চিত্রের মানে বরিশাল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসী ব্যতিক্রম। উল্লেখ্য, বরিশালে একটি বিদ্যুৎ ম্যাজিস্ট্রেটের পদসহ মোট ১২ জন ম্যাজিস্ট্রেটের পদ আছে। বর্তমানে মাত্র ০৬ জন ম্যাজিস্ট্রেট কর্মরত আছে। অর্ধেক সংখ্যক ম্যাজিস্ট্রেট দিয়েও মামলার জট কমানো নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয় বলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত বক্তারা জানান।
অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, বরিশাল জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে ১০টি থানা উদ্ভুত আমলী আদালত এবং ১২টি বিচারিক আদালতে ২০১৭ সালের শুরুতে মোট ৭ হাজার ৪২৭টি মামলা ছিল। গত বছর নতুন করে আরো যুক্ত হয় ৭ হাজার ৯৩৬ টি মামলা। কিন্তু গত বছরে নিষ্পত্তি হয় ৯ হাজার ২১১টি মামলা। মামলা দায়েরের চেয়ে নিষ্পত্তি বেশী হওয়ায় গত বছরে ১ হাজার ২৭৫টি মামলা কমেছে। যে কারণে বছর শেষে মামলা দাড়ায় ৬ হাজার ১৫২ টিতে। তাছাড়া গত বছর দোতরফা সূত্রে ২ হাজার ০৭৫ টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। তার মধ্যে ২৮১টি মামলায় আসামীরা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে। তাছাড়া গত বছর জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসীতে সর্বমোট ৯ হাজার ৭৭৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গৃহীত হয়েছে। এরমধ্যে ৮ হাজার ৬৯ জন স্বাক্ষী পুলিশ জিআর ও নন জিআর মামলায় উপস্থাপন করেছে। বিদায়ী চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট অন্তর্ভূক্ত সকল থনা পরিদর্শন করে স্বাক্ষী উপস্থাপনে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের তাগিদ দিয়েছিলেন। যার ফলশ্রুতিতে রেকর্ড সংখ্যক সাক্ষী পুলিশ বিচারাধীন মামলায় উপস্থাপন করায় মামলার জট কমেছে বলে মনে করা হয়।
বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত অন্যান্য বক্তাদের বক্তব্য হতে জানা গেছে, বিদায়ী সিজেএম আদালতে যোগদান করে নবনির্মিত সিজেএম ভবন নির্মানের কাজ গুরুত্বের সাথে তদারকি করেছিলেন। যে কারণে নবনির্মিত ১০ তলা ভবনটির নির্মান কাজ প্রায় সমাপ্তির পথে। তাছাড়া পূর্বে বিচারপ্রার্থী ও সাক্ষীদের আদালতে দাড়িয়ে থাকতে হতো। বিদায়ী সিজেএম যোগদান করে বিচারপ্রার্থী ও সাক্ষীদের বসার সুবিধার্থে বেঞ্চ নির্মান করে দিয়েছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেসীতে কর্মরত কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ মূলক একাধিক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং তাতে কর্মচারীদেরকে নানাবিদ দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিদায়ী সিজেএম এর মহুমুখী কর্মকান্ডের ফলে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসির কাজে গতির সঞ্চার হয়েছে। যার সুফল সাধারণ জনগন পেয়েছে।