সুগন্ধা নদীতে বিলীন বাবুগঞ্জের আরএম বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন সুগন্ধা নদীতে বিলীন বাবুগঞ্জের আরএম বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন - ajkerparibartan.com
সুগন্ধা নদীতে বিলীন বাবুগঞ্জের আরএম বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবন

5:26 pm , August 28, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ শেষ পর্যন্ত সুগন্ধা নদীর গর্ভে বিলিন হয়েছে বাবুগঞ্জের সৈয়দ মোশারফ-রশিদা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতল ভবনটি। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে নদীতে ভেঙ্গে পড়েছে ভবনটি। একই সাথে নদীতে ভেঙ্গে পড়েছে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ন শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর (দোয়ারিকা সেতু) পূর্ব দিকের সংযোগে মুখের প্রাচীর। সেতুর গার্ডার অঞ্চলও গ্রাস করেছে ভাঙন। তাই এখন হুমকির মুখে পড়েছে এ সেতুটি। দক্ষিণাঞ্চলে প্রবেশদ্বারের এই সেতুটির বড় ধরনের বিপর্যয় এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র বলেই মনে করেন এলাকাবাসী।

তারা জানিয়েছে, বাবুগঞ্জ উপজেলার এ ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলা-উদাসীনতায় এখন হয়ে গেছে বিলুপ্তির ইতিহাস। এর আগে সোমবার সকালে বিদ্যালয়ের পানির ট্যাংকিসহ উত্তর পাশের কিছু অংশ নদীতে ধ্বসে পড়ে। সুগন্ধা নদীর ¯্রােতের টানে মঙ্গলবার ভোরে বিদ্যালয়টি আর টিকে থাকতে পারেনি। স্কুলভবন বিলীনের খবর শুনে সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান এসএম খালেদ হোসেন স্বপন পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখতে সুবিধাজনক স্থানে একটি টিনসেড স্কুলঘর নির্মাণের জন্য উপজেলা পরিষদ থেকে ২ লাখ টাকা ও ৫ বান্ডিল ঢেউটিন অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন। এর আগে বাবুগঞ্জের ইউএনও সুজিত হাওলাদার ও বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সরকারি সহায়তার আশ্বাস দেন।

বিগত ২০০৩ সালে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর (দোয়ারিকা) সেতুর পাদদেশে এ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই প্রতিবছর সন্তোষজনক ফলাফল ও বিভিন্ন পুরস্কার লাভ করে আসছে স্কুলের কৃতি শিক্ষার্থীরা। অথচ ঐতিহ্যবাহী এ বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য কেউ উদ্যোগে নেয়নি। স্কুলের সামনের পাউবোর ব্লক পাইলিং ভেঙে পড়ার পরে বিগত ২০১৪ সালে স্থানীয়ভাবে ৫ লক্ষাধিক টাকা অনুদান সংগ্রহ করে পার্কোপাইন ও বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে এলাকাবাসীর উদ্যোগে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এসব উদ্যোগ উত্তাল সুগন্ধা নদীর কাছে ছিল নিতান্তই যৎসামান্য। এজন্য দরকার ছিল সমন্বিত সরকারি উদ্যোগ। অথচ সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অবহেলায় বর্তমানে স্কুলেভবনের সাথে সাথে নদীতে ভেঙে পড়েছে বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর গাইড ওয়ালও। বরিশাল বিভাগ উন্নয়ন ফোরামের সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক বলেন, স্কুলভবনটি নদীতে বিলীনের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অবহেলা আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাই দায়ী। সেতু রক্ষার জন্য এখনই উদ্যোগী না হলে দক্ষিণাঞ্চলে সড়ক যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সেতুর বিপর্যয়ের ঘটনা সময়ের ব্যাপার হতে পারে। বাবুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান এস.এম খালেদ হোসেন স্বপন বলেন, সেতুটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কিন্তু ভাঙন প্রতিরোধের কাজ পানি উন্নয়ন বোর্ডের। সওজ তাদের সেতু রক্ষার জন্য পাউবোকে নাকি অর্থবরাদ্দ করছে না। পাউবো এবং সওজ একে অন্যের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজেদের দায়ভার এড়ানোর চেষ্টা করছে। সরকারি দুটি দায়িত্বশীল দপ্তরের এমন সমন্বয়হীনতার কারণে আজ সেতুর পাদদেশের ঐতিহ্যবাহী স্কুলটি নদীগর্ভে হারিয়ে গেছে। এখন ১২২ কোটি টাকা দামের এই সেতুটি বাঁচাতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT