6:52 pm , August 24, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ত্যাগের মহিমায় বরিশালে পালিত হয়েছে মুসলমানদের দ্বিতীয় বৃহত্তর দমিও অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদ উল আযহা। ২২ আগস্ট ঈদের জামাত আদায় শেষে আল্লাহর সার্ন্বিধ্ব লাভের আশায় আল্লাহ’র নামে পশু কোরবানী দিয়েছেন হাজার হাজার মানুষ। কোরবানীর পশুর গোশত বানানো পরবর্তী গরিব-মিস্কিন ও আত্মিয় স্বজনদের মাঝে কোরবানীর গোস্ত বিতরণের মধ্যে দিয়ে কোরবানীর দিনটি পার করেন ধর্ম প্রান মুসল্লিরা।
তাছাড়া কোরবানীর ঈদকে কেন্দ্র করে নগরীর বিনোদন কেন্দ্রগুলোতে ভ্রম পিয়াসুদের ভির বেড়েছে কয়েক গুন। আত্মিয় স্বজনদের বাড়িতে গিয়ে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের পাশাপাশি আপনজনদের নিয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে ঘুরে দিন পার করেন মানুষেরা। তাছাড়া ভ্রমন পিয়াসু এবং কোরবানী দেয়া মানুষের নিরাপত্তায় নিজেদের আনন্দ বিনোধন ত্যাগ করেন র্যাব-পুলিশের সহ¯্রাধিক কর্মকর্তা ও সদস্যরা। যারা নিজেদের আনন্দ বিষর্জন দিয়ে রাত-দিন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। যে কারনে ঈদ উল আযহায় নগরীতে দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া বড় ধরনের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
এর পূর্বে প্রতি বছরের ন্যায় এবারেও ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদ উল আযহা উদযাপনের প্রস্তুতি নেন ধর্মপ্রান মুসল্লিরা। সে জন্য ঈদের পূর্বের দিন গভির রাত পর্যন্ত পশুর হাটে ঘুরে ঘুরে সাদ ও সাধ্যের মধ্যে পছন্দের গরু কিংবা ছাগলটি কিনে আনেন কোরবানীর জন্য। ২২ আগস্ট সকালে ঈদের নামাজ আদায় শেষে কোরবানীর পশু জবাইতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন মানুষ। বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মসজিদের ইমাম, মুয়াজ্জিন এবং হাফেজগন ছুরি নিয়ে ছুটে বেড়ান এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়। পশু জবাই করে সম্মানি গ্রহন এবং পরবর্তীতে মসজিদ মাদ্রাসার উন্নয়নের জন্য পশুর চামড়া সংগ্রহের জন্য ছুটে চলে তারা।
এদিকে পশু জবাই শেষে কোরবানীর পশুর গোস্ত বানানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সবাই। পরবর্তীতে তা নিয়ম অনুযায়ী আত্মিস্বজন এবং এতিম-মিস্কিনদের মাঝে বিতরণ করা হয়। এর পর শুরু হয় আত্মিয় স্বজনদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুশল বিনিময় এবং ভ্রমন পিপাসুদের ঘোরাঘুরি। ঈদের দিন থেকে শুরু করে গতকাল ঈদের তৃতীয় দিন পর্যন্ত নগরী এবং নগরীর আশ পাশের প্রতিটি ভ্রমন স্পটে ভ্রম পিয়াসুদের ভির ছিলো চোখে পড়ার মত। শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সকল বয়সি মানুষ পরিবার-পরিজন, স্ত্রী-সন্তান এবং আত্মিয় স্বজন নিয়ে ঘুরে বেড়ান ভ্রমন স্পটগুলোতে।
সরেজমিনে দেখাগেছে, ঈদ উল আযাহাকে ঘিরে নগরীর অন্যতম ভ্রমন স্পট বঙ্গবন্ধু উদ্যান, মুক্তিযোদ্ধা পার্ক, ত্রিশ গোডাউন বব্ধভূমি সংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীর তিরে, নগরীর প্লানেট পার্ক, আমতলার মোড় স্বাধীনতা পার্ক, চৌমাথা লেকের পাড়, শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সেতু এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার মাধবপাশা এলাকাধিন দুর্গা সাগর পাড়ে দর্শনাথীদের ভিরে পা ফেলার ঠাই নেই। সেখানে দর্শনার্থিদের বাড়তী বিনোদ যোগাতে আয়োজন করা হয় ছোট বড় কনসার্ট সহ উচ্চ শব্দে গান পরিবেশ। তাছাড়া বরিশাল নগরী সহ আশ পাশের অনেক মানুষ ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে ছুটেছেন ঐসর্গিক সৌন্দর্যের লিলাভূমি কুয়াকাটার সাগর কন্যার তীড়ে। পর্যটকদের ভিরে কুয়াকাটার প্রতিটি হোটেল-মোটেল বুক হয়ে যায় প্রায় সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই। তাছাড়া সাগর পাড়ে হাজার হাজার দর্শনার্থীদের ভির এক মনরম পরিবেশ ফিরিয়ে আনে।
অপরদিকে ঈদ উল আযহা উদযাপনে নগরীতে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সগঠন আয়োজন করে ঈদ উৎসবের। সংগঠনের সকল সদস্য কিংবা বন্ধু মহল মেলে মেতে ওঠে ঈদ আনন্দে। পুরানো দিনের স্মৃতি স্মরণ করে সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না মিলে মিশে ভাগ করে নেন একে অপরে। ঈদকে ঘিরে বাড়ির আঙিনা সাজানো হয়েছে আলোক সজ্জায়। সব মিলিয়ে ঈদ উল আযহাকে ঘিরে আনন্দ উচ্ছাসে মেতে ওঠে সর্বস্তরের মানুষ। শুধুমাত্র মুসলমান ধর্মাবলম্বিরাই নয়, তাদের সাথে মিলে মিশে ঈদ আনন্দ উপভোগ করতে দেখা গেছে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদেরও।