নগরীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত ॥ ১৩৮ যান ও চালকদের বিরুদ্ধে মামলা নগরীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত ॥ ১৩৮ যান ও চালকদের বিরুদ্ধে মামলা - ajkerparibartan.com
নগরীতে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ অব্যাহত ॥ ১৩৮ যান ও চালকদের বিরুদ্ধে মামলা

6:52 pm , August 2, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ট্রাফিক পুলিশের ভুমিকায় রয়েছে শিক্ষার্থীরা। অবৈধ যান ও চালকদের আটকে ট্রাফিক পুলিশের কাছে সোপর্দ করছে তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার নিরাপদ সড়ক ও রাজধানীতে শিক্ষার্থীদের চাপা দেয়ার ঘটনায় বিচারসহ সাত দফা দাবীতে মহাসড়ক অবরোধকালে ওই দায়িত্ব পালন করে শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পরেও ইউনিফর্ম পরিধান ও ব্যাজ ধারন করে নগরীর চৌমাথা এলাকায় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন এবং বিক্ষোভ করে শত শত শিক্ষার্থীরা। বৃষ্টি উপেক্ষা করে ওই কর্মসুচী পালনকালে সাত দফা দাবি আদায়ে শ্লোগান দেয়। এ সময় রুপাতলী ও নথুল্লাবাদ থেকে আসা যানবাহন চলাচলে বাঁধা দেয়। এতে আটকে পড়া যানবাহন এবং চালকদের লাইসেন্স-কাগজপত্র দেখতে চায়। পরে বেলা সোয়া ১২ টার দিকে মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঞা, সিনিয়র সহকারী পুলিশ কমিশনার শাহানাজ পারভীনসহ উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বিক্ষোভ কর্মসূচী স্থগিত করে মহাসড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেয় শিক্ষার্থীরা। কর্মসুচীতে সরকারি সৈয়দ হাতেম আলী কলেজ, অমৃত লাল দে কলেজ, সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি মডেল কলেজ, ইনফ্রা পলিটেকনিক, সরকারী মহিলা কলেজ, বরিশাল সরকারী জিলা স্কুল , উদয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়সহ সহ বেশ কিছু স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।
অপরদিকে, গাড়ির বৈধ কাগজপত্র ও ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখিয়ে পার পেয়েছেন বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে চলাচলরত যানবাহনের চালকরা। আর যাদের কাছে লাইসেন্স ছিলনা, তাদের মামলার বোঝা নিয়ে যাত্রা করতে হয়েছে। বরিশাল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই কর্মকান্ড করেন। তারা শতাধিক গাড়ির কাগজপত্র ও চালকের লাইসেন্স দেখতে চায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, যারা ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পেরেছেন তাদের গাড়ি ছেড়ে দেওয়া হয়েছে আর যারা পারেননি তাদের গাড়ি আটকে ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় বলে জানান তারা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিক জানান, আমরা নিরাপদ সড়কের দাবিতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনীও আমাদের সহায়তা করেছে। ইচ্ছে থাকলে যেকোনো কিছুই সম্ভব। বেশ কিছু গাড়ির চালকের লাইসেন্স না থাকায় ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে মামলা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। এদেরমধ্যে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়িও ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী বেল্লাল হোসেন রানা আমরা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রেখেই আন্দোলন করেছি। এসময় জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে চলাচলকারী বাস, ট্রাক সহ সবধরনের যানবাহনের গতীরোধ করে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শনের অনুরোধ জানাই। যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রেখে টানা দুই ঘন্টা পুলিশের সহযোগিতায় শতাধিক যানবাহন ও চালকদের লাইসেন্স চেক করা হয়।
বেল্লাল হোসেন রানা বলেন, যারা গাড়ির বৈধ কাগজপত্র এবং চালক লাইসেন্স দেখাতে পেরেছেন তাদেরকে আটকে না রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। তবে যারা বৈধ কাগজপত্র ও চালক লাইসেন্স দেখাতে পারেনি তাদের আটকে রাখা হয়। পরবর্তীতে ট্রাফিক পুলিশ এর মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে মেটারযান অধ্যাদেশ অনুযায়ী মামলা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা নিরাপদ সড়কের দাবীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী পালন করেছি। এতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আমাদের সহযোগিতা করেছে। ইচ্ছে করলেই যে কোন কাজ করা সম্ভব তা দেখাতেই গাড়ির চালকদের বৈধ লাইসেন্স দেখতে পাওয়া হয়।
তিনি বলেন, বেশ কিছু গাড়ির চালক ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখাতে পারেনি। যার মধ্যে শুধুমাত্র সাধারণ গাড়িই নয়, রয়েছে সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের গাড়িও। তাদের কাউকেই ছাড় দেয়া হয়নি। ট্রাফিক পুলিশের মাধ্যমে গাড়ির বৈধ কাগজপত্র ও চালক লাইসেন্স না থাকা চালকদের দাড় করিয়ে রেখে মামলা দেয়া হয়েছে। চালকদের দাড়িয়ে থেকে মামলার বোঝা কাধে নিয়েই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যেতে হয়েছে।
বরিশাল মেট্রোপলিটন ট্রাফিক পুলিশের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর (টিআই) মো. রবিউল ইসলাম জানান, বৃহস্পতিবার সারা দিনে মোট ১৩৮টি মামলা হয়েছে। এছাড়া কাগপত্র বিহিনী ৩টি মোটর সাইকেল আটক করা হয়েছে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার যে মামলা হয়েছে তার বেশিরভাগ মামলাই বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাতে হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক পুলিশের উপস্থিতিতে গাড়ির কাগপত্র ও লাইসেন্স চেক করেছে। যাদের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী বরিশাল-পটুয়াখালী রুটে চলাচলকারী ৫টি যাত্রীবাহী বাস ও ২টি মাহেন্দ্র’র কাগজপত্রে ত্রুটি ছিলো। এ কারনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তাছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় মোট ৩১টি, ওভার লোডের অভিযোগে ৩৮টি ও হেলমেট বিহিনী মোটর সাইকেল চালানোর অপরাধে ৬০টি মামলা করা হয়েছে। যার বেশিরভাগ মামলা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় হয়েছে।
ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মো. রবিউল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যে কাজটি করেছে সত্যিই ভালো কাজ। এভাবে প্রতিমানুষ সচেতন হলে একটি নিরাপদ সড়কের দাবী বাস্তবায়ন খুবই সহজ হবে বলে মনে করেন তিনি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT