হয়রানী-ভয়ে এলাকা ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মীরা হয়রানী-ভয়ে এলাকা ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মীরা - ajkerparibartan.com
হয়রানী-ভয়ে এলাকা ছাড়া কাউন্সিলর প্রার্থীদের কর্মীরা

6:07 pm , July 28, 2018

সাঈদ পান্থ ॥ পুলিশী অভিযানের মুখে বিএনপিপন্থী কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থক ও নেতাকর্মীরা গা ঢাকা দিয়েছে। নির্বাচনের ক্ষণ যতই এগিয়ে আসছে, ভয়-আতংক ও হামলা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্রমশই সহিংস হয়ে পড়ছে নগরীর নির্বাচন পরিস্থিতি। প্রতিপক্ষ কাউন্সিলর প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ভয়ে নগরী ছেড়েছে অনেক কর্মী। আবার পুলিশী হয়রানীরও অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে বিএনপি দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থীরাই এ ধরনের অভিযোগ করছে। তবে এই অভিযোগকে মিথ্যা ও গুজব বলে জানিয়েছেন আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও পুলিশ প্রশাসন। আর নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, তারা নির্বাচনী মাঠে তৎপর রয়েছেন। ভোট শান্তিপুর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।

২১ নং ওয়ার্ডের বিএনপির ঘুড়ি প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী আলতাফ মাহামুদ সিকদার বলেন, ‘ধোপাবাড়ি এলাকার আমার কর্মী হাসান ও ইকবাল প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের ভয়ে পালিয়ে আছে। প্রতিদিনই তাদের বাড়ি গিয়ে পুলিশ সার্চ করছে। আর সন্ত্রাসীরা বলে এসেছে ধরতে পারলে তাদের মেরেই ফেলবে। ’ ওয়ার্ড সূত্রে জানা গেছে, ওয়ার্ডের করিম কুটির এলাকার বিজু, ফুটবল হারুন, মুরাদসহ বেশ কয়েকজন বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের হুমকি দিচ্ছে। এমনকি ঘুড়ি প্রতিকের সমর্থক ৫ জনকে মারধর করে পুলিশে ধরিয়ে দিয়েছে। ওয়ার্ডের এক বিএনপি নেতা অভিযোগ রয়েছেন, ঘুড়ি প্রতীকের ভোটারদের ভোটের দিনে কেন্দ্রে যেতে দেয়া হবে না বলে ঘোষনা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও তার ক্যাডাররা। তবে ওয়ার্ডের ঠেলাগাড়ী প্রতীকের কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ সাঈদ আহমেদ মান্না বলেন, ‘আমার প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীদের নিয়ে নির্বাচন করে। যখনই পুলিশ তাদের আটক করে, তখনই বলে প্রতিপক্ষ করিয়েছে।

৭ নং ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ আকবর বলেন, তার প্রচারনায় বাঁধা দেয়া হচ্ছে। এভাবে নির্বাচন হয় না। এ বিষয়ে তিনি নির্বাচন কমিশনকে লিখিত অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানান তিনি। তবে আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রার্থী এ্যাড. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, মাঠে প্রশাসন রয়েছে। এলাকার মানুষজন রয়েছে। তারা কেউ কিছু দেখে না। এরা শুধু বানিয়ে বানিয়ে বলছে। সব মিথ্যা কথা। নির্বাচনকে কলুষিত করার জন্য তারা এমন অভিযোগ করছে। আমি খোজ নিয়েছি এ ধরনের কোন ঘটনা এই ওয়ার্ডে ঘটেনি।

নগরীর ১৩নং ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী মো: মশিউর রহমান মিঠু বলেন, ‘আমার কর্মীদের পুলিশ হয়রানী করছে। আশিক নামে এক কর্মী এখন বরিশাল ছেড়ে চলে গেছে। এ ছাড়া শাওন নামে আরো এক কর্মীকে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের কাউন্সিলর প্রার্থী মেহেদী পারভেজ খান আবিরের প্ররোচনায় গত রাতে কাজীপাড়া থেকে আটক করেছে। আরো বেশ ক’জন কর্মী এখন পালিয়ে পালিয়ে থাকছে। এ বিষয়ে বর্তমান কাউন্সিলর আবিরের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।

১৪নং ওয়ার্ডের জামায়াতের কাউন্সিলর প্রার্থী এ্যাড. সালাউদ্দিন মাসুম বলেন, ‘আমার সব কর্মীই পালিয়ে আছে। ওয়ার্ডেই থাকতে পারছে না। মো: রুবেল ও শাকিলকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে সরকার দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী তৌহিদুর রহমান ছাবিদ। পুলিশ প্রশাসন নিয়ে ছাবিত আমার নেতাকর্মীদের হয়রানী করছে। ’ এ বিষয়ে কাউন্সিলর প্রার্থী তৌহিদুর রহমান ছাবিদ বলেন, ‘আমার সুনাম নষ্ট করার জন্য মিথ্যা গুজব ছড়াচ্ছে। তার নেতাকর্মী আগেই পুলিশের তালিকায় রয়েছে। প্রায় সবার নামে মামলা রয়েছে। তাদের তো পুলিশ ধরতেই পারে। আমি পুলিশের সাথে কখনই যাইনি। ’ ১৬, ১৭ ও ১৮ নং সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী মজিদা বোরহানের ছেলে ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম সুজন জানান, ‘আমি আমার মায়ের নির্বাচনও করতে পারছি না। পালিয়ে পালিয়ে থাকতে হচ্ছে। আমি মেয়র প্রার্থীর নির্বাচন না করার পরও পুলিশ প্রতিরাতে আমার বাসায় হানা দিচ্ছে। হয়রানীর মধ্যে রয়েছি। ’ তিনি বলেন, পুলিশ সরকার দলীয় প্রার্থীর লোক হয়ে বিএনপি নেতাকর্মীদের হয়রানী করছে। ১২নং ওয়ার্ডের বিএনপির কাউন্সিলর প্রার্থী কেএম শহিদুল্লাহ বলেন, ‘আমার কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিপক্ষ সন্ত্রাসীরা হুমকী দিচ্ছে। অনেকে পালিয়ে পালিয়ে থাকছে। এছাড়া পুলিশী হয়রানীতো রয়েছেই। ’ তবে কাউন্সিলর প্রার্থী জাকির হোসেন ভুলু বলেন, মিথ্যা কথা বলছে।

মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সহকারি কমিশনার নাসির উদ্দিন মল্লিক জানান, এ বিষয়ে আমার জানা নেই। আর বিষয়টিও সঠিক নয়। আমরা নিয়মিত মামলার আসামিদের শুধু আটক করছি। অন্য কাউকে নয়। এ ব্যাপারে সিটি নির্বাচনের সহকারী রির্টানিং অফিসার ও বরিশাল জেলা সিনিয়র নির্বাচন কর্মকর্তা মো: হেলাল উদ্দিন খান বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কাছে কোন অভিযোগ আসে নি। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। পাশাপাশি নির্বাচনী মাঠে আমাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ বাহিনী রয়েছে।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT