6:47 pm , July 25, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থন নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে নতুন বিভ্রান্তি। প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপসকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের সাদিক আবদুল্লাহকে সমর্থন দেয়া হয়েছে বলে গুঞ্জন চলছে। তবে এমন গুঞ্জন সত্যি নয় বলে দাবী করেছেন জাতীয় পার্টি মনোনিত মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস।
তার দাবী, আমি দলীয় প্যাডে লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করার জন্য মনোনিত হওয়ার একটি চিঠি পেয়েছি। কিন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে জাতীয় পার্টি সমর্থন দিয়েছে এমন কোন চিঠি আমি আদৌ পাইনি। তাই প্রার্থী হিসেবে এখনো আমি নির্বাচনী মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছি। জাতীয় পার্টি’র নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের পাশাপাশি ভোটারদের এ নিয়ে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
তবে নৌকা’র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহকে দলীয় সমর্থন দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ’র প্রেস এন্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারী সুনীল শুভরায়।
তিনি জানিয়েছেন, একটি আধুনিক বরিশাল সিটি কর্পোরেশন বিনির্মাণের লক্ষ্যে দক্ষিণাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বুধবার আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে তার দলীয় সমর্থন পত্রে স্বাক্ষর করেন।
এমনকি পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস এন্ড পলিটিক্যাল ডেপুটি সেক্রেটারী খন্দকার দেলোয়ার জালালী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের প্রেস সেক্রেটারী সুনীল শুভরায়।
তাছাড়া পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য বরিশাল জেলা ও মহানগর জাতীয় পার্টির সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের নৌকা প্রতীকের পক্ষে এক যোগে কাজ করতে বলেছেন।
তবে এমন তথ্য বিভ্রান্তিকর দাবী করে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির মনোনিত মেয়র প্রার্থী মো. ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, পার্টির দলীয় প্যাডে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ’র স্বাক্ষরিত পত্রে আমাকে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য লাঙ্গল প্রতীক দিয়ে প্রার্থী মনোনিত করা হয়। সেই চিঠি আমি পেয়েছি।
কিন্তু নতুন করে আমাকে বাদ দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কিংবা অন্য কাউকে সমর্থন দেয়া হয়েছে বলে আমার জানা নেই। পার্টি থেকেও আমাকে এ ধরনের কোন চিঠি কিংবা তথ্যও জানানো হয়নি দাবী করে ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, আর মাত্র ৫ দিন পরেই বিসিসি নির্বাচনের ভোট গ্রহন।
এজন্য পূর্বের মত বুধবার সকাল থেকেই আমি আমার নির্বাচনী প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছি। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অধ্যাপক মহসিন উল ইসলাম হাবুল সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ আমার সাথে ছিলো। সকাল থেকে রিফিউজি (খালেদাবাদ) কলোনী, বাংলাবাজার, নিউ সার্কুলার রোড, কাজিপাড়ায় গণসংযোগের পাশাপাশি অন্তত পাঁচটি পথসভা করেছি। প্রচার মাইকের মাধ্যমে ভোট চাওয়ার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
জাতীয় পার্টি বরিশাল জেলার আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক মহাসিন উল ইসলাম হাবুল বলেন, জেলা মহানগর নেতৃবৃন্দকে অন্য প্রার্থীর পক্ষে প্রচারনা করতে বলা হলে সেরকম একটি পত্র আমার হাতেও আসার কথা। কিন্তু এ ধরনের কোন পত্র আমি পাইনি। জাতীয় পার্টির প্রার্থীর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে কেউ অপ-প্রচার এবং বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ তোলেন তিনি।
এক প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ’র প্রেস এন্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারী সুনীল শুভরায় বলেন, সমর্থন দেয়া হয়েছে ঠিক কিন্তু প্রার্থীকে বিষয়টি এখনো জাননো হয়নি। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে সমর্থন দেয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টির একাংশের তুমুল বিরোধিতার মধ্যেও নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামানো হয় জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা ইকবাল হোসেন তাপসকে। এমনকি তাকে দলীয় মনোনয়ন নিশ্চিত করা হয়। দলের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ার পর গতকাল তিনি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। এসব কিছুর পরে নির্বাচনের মাত্র ৫ দিন বাকি থাকতে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের নাটকীয় মোড় আওয়ামী লীগের পালে নতুন হাওয়া লাগতে পারে।