কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আওলাদের বদলি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন ! কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আওলাদের বদলি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন ! - ajkerparibartan.com
কোতয়ালি মডেল থানার ওসি আওলাদের বদলি নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন !

11:47 am , July 14, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুনের বদলি নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। বদলির পরেও তিনি কেন যাচ্ছেন না এ নিয়ে সর্বমহলে আলোচনা চলছে। যদিও কোতয়ালি থানার পরিবেশ তার আমলে যতটা উন্নতি হয়েছে, বিগত দিনে তার ছিটেফোটাও ছিলো না। ওসির বদলি নিয়ে বিভিন্ন রকমের কথা শোনা যাচ্ছে। কেউ বলছেন তিনি নিজেই চলে যেতে চাইছেন আবার অনেকের মতে তার যাওয়া-না যাওয়া নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশনের উপর। বিশেষ করে নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর বদলি প্রক্রিয়ার পুরো এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। যার কারণে ইচ্ছা করলেও তিনি এখন যেতে পারছেন না। কোতয়ালি থানার ওসি শাহ্ মো. আওলাদ হোসেন মামুন একজন সাহসী পুলিশ কর্মকর্তা সে ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই। বিশেষ করে বিরোধীদলের ধ্বংসাত্মক রাজনৈতিক কর্মকান্ডে তার জিরো টলারেন্স নীতি আওয়ামী লীগ সহ স্থানীয় সকল পর্যায়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে। একারণে পুলিশের মধ্যে বিএনপিপন্থী কর্মকর্তারা তার প্রতি অনেকটাই নাখোশ। একরোখা ও সাহসী সিদ্ধান্তের কারণে অনেক সময়ই ওসি আওলাদ অনেকেরই বিরাগভাজন হয়েছেন। কোতয়ালি থানার অভ্যন্তরীণ রুপ পাল্টে দিয়ে তিনি থানার পুরো পরিবেশই বদলে দিয়েছেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পরে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশী সেবাবঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ তুলনামুলক কমই শোনা গেছে। যদিও এমন ব্যবস্থা চালুর ক্ষেত্রে থানার অনেক অফিসারের সাথে আওলাদের তিক্ততাও হয়েছে। কিন্তু জনগণের কাছে পুলিশের সেবা পৌছে দিতে অবহেলা করেননি তিনি। বরং নিজ কর্মপরিধীর বাইরে গিয়েও তিনি ভিক্টিমকে সহযোগিতা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন।
এক্ষেত্রে তিনি অনেকাংশে সফল হয়েছেন বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। তবে তার একরোখা স্বভাবের কারণে অনেকেই তার প্রতি বিরাগভাজন। মূলত এই কারণেই তার থানার অনেক অফিসার তার প্রতি ক্ষুব্ধ। পরবর্তীতে ক্ষোভে তারা ওসি আওলাদের বদলি আদেশ তরান্বিত করতে রাজনৈতিক মহলেও দৌড়ঝাপ শুরু করেন। কিন্তু কর্মগুণে স্মার্ট অফিসার আখ্যায়িত হওয়া ওসি আওলাদকে সেই ষড়যন্ত্র মোটেও টলাতে পারেনি।
তবে এই কর্মকর্তাকে থানা থেকে হঠাতে পিছু ছাড়েনি ওই গ্রুপটি। যে কারণে সর্বশেষ ওসির স্বাভাবিক বদলি আদশেটিকে হাতিয়ার হিসেবে নিয়ে মিডিয়ার দুয়ারে কড়া নাড়ছে। এই ষড়যন্ত্রে কারা ব্যবহৃত হচ্ছেন সেই বিষয়টি অনেক আগেই প্রকাশ হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে তিনি শহরবাসীর সেবা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছেন। ফলশ্রুতিতে তিনি বেশ প্রসংশাও কুড়িয়েছেন। অবশ্য বদলির পরেও তিনি কেন যাচ্ছেন না এবিষয়ে বিভিন্ন রকমের মন্তব্য শোনা যাচ্ছে।
পুলিশের সর্বোচ্চ পিপিএম সেবা পদকধারী এই কর্মকর্তা এক সময়ের জরাজীর্ণ বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার রুপ পাল্টে আধুনিকতার ছোয়া লাগিয়েছেন। পুরো থানা কম্পাউন্ড সাজিয়ে কোতয়ালিকে আসলেই মডেলে রুপ দিয়েছেন। শহরের পুলিশ বান্ধব ব্যক্তিগণের সহযোগিতায় থানার সম্মুখে নির্মাণ করেছেন একটি মোটরসাইকেল গ্রেজ ও একটি গোলঘর। ভেতরে প্রবেশের একমাত্র সড়কটি সংস্কারের পাশাপাশি ওসির বসতঘরটিতে এনেছেন চমক। থানার অভ্যন্তরে শোভা পাচ্ছে সু-সজ্জিত ফুলের বাগান ও বাহারী রঙের দৃষ্টিনন্দন ফুলের টব।
এমতাবস্থায় বলতে হচ্ছে- ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার সন্তান ওসি শাহ্ আওলাদ হোসেন মামুনের কারিশমায় পাল্টে গেছে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার চিত্র। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ড কমিউনিটিং পুলিশের সভাপতি মাহবুব আলম জানিয়েছেন- জনসেবা থেকে শুরু করে থানার সামগ্রিক পরিবেশের যে উন্নয়ন তিনি সাধিত করেছেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বলতে গেলে বিগত দুই যুগেও কোতয়ালি থানার পরিবেশ এমন ছিল না। বর্তমানে এই বিষয়টি পুলিশি সেবাপ্রত্যাশীদের মনে ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করেছে। যদিও এখানেই শেষ নয়, আধুনিক থানা গড়তে ওসির পরিকল্পনা। এত গেল থানার ভেতরের কথা। এবার আসা যাক অপরাধ কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে তিনি কি ভুমিকা রেখেছেন।
অথচ এই পুলিশ কর্মকর্তা অনেক আগেই বরিশাল ছাড়তে পুলিশের উচ্চমহলে আর্জি জানিয়েছিলেন। কিন্তু তখন পুলিশ কমিশনার রুহুল আমিন তাকে ছাড়তে চাইছিলেন না। কারণ ওসির কর্মগুণে নিজেই অভিভুত হয়েছিলেন কমিশনার। যে কারণে তিনি চাইছিলেন না তার বদলির আগে ওসি আওলাদ বরিশাল ত্যাগ করুক। এমনকি এই বিষয়টিই সহজভাবে নিতে পারেনি কেউ কেউ।
এক্ষেত্রে ওসি আওলাদের ভাষ্য হচ্ছে- নিন্দুকেরা অনেক কথাই বলেন। কিন্তু আমি ২০১৬ সালের ১১ জুন যোগদানের পরে কোতয়ালি পুলিশের সেবা জনগণ কেমন পেয়েছে তা সকলেরই জানা রয়েছে। সুতরাং বিষয়টি নিয়ে বেশি কথা না বলাই ভাল মনে করছি। বদলির বিষয়ে ওসি বলেন পুলিশের চাকুরি করি বদলি হওয়াটা স্বাভাবিক। কারণ একই কর্মস্থলে পুলিশ পরিদর্শকের চাকুরিতে থাকার সুযোগ রয়েছে মাত্র ১৮ মাস। কিন্তু এখানে আমি ২৬ মাস কাজ করেছি। রাষ্ট্রের প্রয়োজনে পুলিশ সদর দফতর আমাকে যেখানে বদলি করবে সেখানেই যেতে প্রস্তুত। যদিও ওসির এই বদলি আদেশ নিয়ে কিছুটা জটিলতা রয়েছে। কারণ তফসিল ঘোষণা পরে কোন কর্মকর্তার বদলি হলে নির্বাচন কমিশনারের বিধিনিষেধ মেনে তাকে যেতে হয়। যদিও ওসি আওলাদ সেই সব নিয়ম মেনে যেতেই নির্বাচন কমিশনের আদেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT