6:29 pm , July 12, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আগামী ৩০ জুলাই বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছেন বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র আলহাজ্ব এ্যাড. মজিবর রহমান সরওয়ার। প্রচারনার দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে দিনভর নগরীর বিভিন্ন এলাকায় প্রচার-প্রচারনা এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করেছেন তিনি। বিএনপি’র বিজয়ে নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ প্রচার প্রচারনা এবং যে কোন ভয়-ভীতির উর্ধে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন।
এদিকে প্রচার প্রচারনার তৃতীয় দিন গতকাল সকাল থেকে প্রচারনায় নেমে পড়েন মজির রহমান সরওয়ার। তৃতীয় দিনের প্রচারনায় নতুন করে যুক্ত হন তার ছেলে নাফিস ইয়াছির। ছাত্র ও যুবদল নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে বাবার পক্ষে ভোটারদের মাঝে ধানের শীষের লিফলেট বিতরণ করেন তিনি।
অপরদিকে গণসংযোগকালে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী আলহাজ্ব এ্যাড. মজিবর রহমান সরওয়ার অভিযোগ করে বলেন, ৩০ জুলাই’র নির্বাচন কতটুকু সুষ্ঠু হবে তা নিয়ে এখনই শংকা সৃষ্টি হয়েছে। কেননা প্রশাসন এখনই পক্ষপাত্বি করছে। তারা এক পক্ষের হয়ে কাজ করছে। বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের প্রচার-প্রচারনায় বিভিন্ন ভাবে বাঁধা সৃষ্টি করছে। অথচ আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী আচরণবিধি লংঘন করছে সে বিষয়টির প্রতি তাদের কোন গুরুত্ব নেই।
সরোয়ার বলেন, আমরা নির্বাচনে লেভেল প্লেইন ফিল্ড চাচ্ছি। কিন্তু প্রশাসন তা না করে গাজীপুর ও খুলনা সিটি নির্বাচনের মত করেই এগোচ্ছে। আচরণবিধি লংঘন করে আওয়ামী লীগ নৌকার শ্লোগান দিয়ে মিছিল করছে। আর আমাদের কর্মীরা প্রচারনাও করতে পারছে না। প্রচারনা চালাতে গেলে তাদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশনা রয়েছে ওয়ারেন্ট ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করা যাবে না। কিন্তু ইসি’র সেই নির্দেশনাও উপেক্ষা করছে প্রশাসন। তারা বিনা ওয়ারেন্ট আমাদের কর্মী সমর্থকদের ধরে নিয়ে মামলা দিয়ে জেলে ঢুকিয়ে দিচ্ছে। নেতা-কর্মীদের মধ্যে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টির চেষ্টা করছে প্রশাসন। যাতে তারা ধানের শীষের পক্ষে প্রচার-প্রচারনা করতে না পারে।
মজিবর রহমান সরওয়ার আরো বলেন, আমি আগেই বলেছি, অন্য সিটির সাথে বরিশাল সিটি’র নির্বাচন এক করে দেখলে চলবে না। কেননা এখাবে প্রধানমন্ত্রীর আত্মিয় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী। আবার প্রার্থীর বাবা মন্ত্রীমর্যাদার একজন নেতা। যে কারনে প্রশাসন তাদের নিয়ন্ত্রনে থাকবে বলে আশংকা রয়েছে। এমনকি প্রশাসন তেমনটিই করছে। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বাবা ফ্লাক উড়িয়ে নগরীতে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। নির্বাচনী আচরনবিধি লংঘন করে প্রচার প্রচারনা করছে। আমরা সে বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার নিটক অভিযোগও দিয়েছি। কিন্তু কোন কাজ হচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলে বলেন, জণগনের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্যই বিএনপি সিটি নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এটি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনের একটি অংশ। আর সুষ্ঠু নির্বাচন হলে বরিশালের মানুষ বিএনপিকেই ভোট দিয়ে বিজয়ী করবেন।
এর আগে সকালে মজিবর রহমান সরওয়ার নগরীর নাজিরের পুল থেকে স্ব-রোড, বাজার রোড, লাইন রোড ও কাটপট্টি’র একাংশে নির্বাচনী গণসংযোগ করেন। এসময় তিনি ধানের শীষে ভোট চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। এছাড়া বিকালে নগরীর মরকখোলার পুল থেকে শুরু করে হাসপাতাল রোড এলাকায় লিফলেট বিতরণ ও সাধারণ ভোটারদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়া বেলা ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগরীর সদর রোডে জেলা ও মহানগর বিএনপি কার্যালয়ে নির্বাচনী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। মেয়র প্রার্থী মজিবর রহমান সরওয়ারের উপস্থিতিতে সেখানে ৩০ ওয়ার্ড বিএনপি’র সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগন উপস্থিত ছিলেন।
তাছাড়া দিনভর গণসংযোগকালে মজিবর রহমান সরওয়ার’র সাথে অন্যান্যদের মধ্যে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলতাফ হোসেন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা বিএনপি’র সভাপতি এবায়েদুলহক চান, উত্তর জেলা’র সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন ফরহাদ, দক্ষিণ জেলার সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. আবুল কালাম শাহীন, মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সিকদার, জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মনিরুজ্জামান ফারুক, মনিরুজ্জামান তালুকদার, সহ-সম্পাদক আনোয়ারুল হক তারিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।