5:02 pm , July 9, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ হঠাৎ করেই আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন থেকে সরে দাড়ালেন ১৫ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সৈয়দ জাকির হোসেন জেলাল। প্রার্থী হিসেবে আলোচনার উর্ধে থাকা টানা ২৩ বছরের অপ্রতিদ্বন্দ্বী জনপ্রতিনিধি জেলাল গতকাল সোমবার তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। শারীরিক অসুস্থতা এবং পরিবারিক সমস্যার কারন দেখিয়ে নির্বাচন থেকে দাড়ালেও সাধারণ মানুষের পাশে থাকার বিষয়ে আশ্বস্থ করেছেন তিনি। তবে শারীরিক অসুস্থতার অজুহাতে নির্বাচন থেকে তার সরে দাঁড়াবার বিষয়টি মেনে নিতে পারছেন না সাধারণ ওয়ার্ডবাসি। আর তাই প্রার্থীতা প্রত্যাহারের খবর পেয়ে শত শত নারী-পুরুষ ছুটে যান সৈয়দ জাকির হোসেন জেলাল’র বাস ভবনে। জেলাল যাতে প্রার্থীতা প্রত্যাহার না করতে পারে সে জন্য তার বাড়ির সামনে অবস্থান নেয় তারা। জাকির হোসেন জেলাল’র পক্ষে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয় বটতলা মীরাবাড়ি এলাকা। সাধারণ মানুষের কান্নার ফলে সৃষ্টি হয় এক হৃদয় বিদারক পরিবেশের।
এলাকাবাসি জানান, দুপুরে তারা শুনতে পান জাকির হোসেন জেলাল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করছেন। এমন খবর পেয়ে তারা জাকির হোসেন জেলাল’র বাস ভবনের সামনে ছুটে যান। শত শত মানুষ বাড়ির সামনে ভীড় করে তাকে মনোনয়নপত্র প্রত্যহার না করার জন্য বলেন। এসময় সৈয়দ জাকির হোসেন জেলাল ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষকে আশ^স্থ করেন। অসুস্থতার কারনে তিনি এবারের নির্বাচন থেকে স্বেচ্ছায় সড়ে দাঁড়ান বলে সবাইকে জানান। তিনি আগামীতে নির্বাচনে অংশগ্রহন করবেন এবং সবসময়ই অতীতের মতো সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন বলে সকলকে শান্তনা দেয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু সৈয়দ জাকির হোসেন জেলাল’র এমন শান্তনা মানতে নারাজ ওয়ার্ডের ভোটারা। তারা বলেন, একজন জনপ্রিয় কাউন্সিলর জাকির হোসেন জেলাল। দল-মত নির্বিশেষে মানুষ তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছে। এবারেও তার নির্বাচনে অংশগ্রহনের কারনে সকল প্রার্থীর থেকে আলোচনার উর্ধে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি নির্বাচনে মাঠে থাকার ঘোষনাও দিয়েছেন। কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি প্রার্থীতা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন নিলেন সেই প্রশ্ন খুঁজে ফিরছেন ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ।
এদিকে প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়টি প্রথম দিকে এড়িয়ে যান বর্তমান কাউন্সিলর সৈয়দ জাকির হোসেন জেলাল। তিনি বলেন, আমি আমার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করিনি। কেউ বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। অবশ্য বিকাল ৫টার দিকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের নোটিশ বোর্ডে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদনপত্রটি লাগানো দেখা যায়। বিষয়টি নিয়ে পুনরায় যোগাযোগ করা হলে তিনি তার প্রার্থীতা প্রত্যাহারের বিষয়টি স্বীকার করেন। তিনি বলেন, কোন চাপে পড়ে নয়, বরং শারীরিক অসুস্থতা এবং পারিবারিক কারনে আমি এবারের নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়িয়েছি। নির্বাচন করছিনা বলে ওয়ার্ডবাসির কাছ থেকে সরে যাচ্ছি না। ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষ আমার প্রতি যে শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা দেখিয়েছেন তাতে আমি তাদের প্রতি আজীবন কৃতজ্ঞ থাকব। জনপ্রতিনিধি না হলেও সামনের দিনগুলোতে তিনি ওয়ার্ডের সাধারণ মানুষের পাশে থাকবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।