প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করবেন ভোটাররা প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করবেন ভোটাররা - ajkerparibartan.com
প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করবেন ভোটাররা

6:13 pm , July 7, 2018

মর্তুজা জুয়েল ॥ প্রথমবারের মত অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দলীয় প্রতীকে সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন। মেয়র পদে দল থেকে নির্দিষ্ট দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবেন প্রার্থীরা। কাউন্সিলর পদে নির্দিষ্ট কোন দলীয় প্রতীক না থাকলেও আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থীদের নির্দিষ্ট প্রতীক বরাদ্দ চাওয়া হচ্ছে। তবে বিএনপি সমর্থিত কাউন্সিলররা পূর্বের নির্বাচনী প্রতীক পেতে আগ্রহী বলে জানা গেছে। আগামী মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন থেকে প্রার্থীদের প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হবে। এরপরই শুরু হবে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারনা। বরিশাল সিনিয়র জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. হেলালুদ্দিন খান জানান, নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত ৪০ টি রাজনৈতিক দলের নির্দিষ্ট প্রতীক স্ব স্ব দলের মনোনীত মেয়র প্রার্থীদের বরাদ্দ দেয়া হবে। স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের জন্য ১২ টি প্রতীক নির্ধারন করা আছে। এছাড়া প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য অভিন্নভাবে সাধারন আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য ১২টি এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থীদের জন্য ১০ টি প্রতীক বরাদ্দ করা হয়েছে। একই ওয়ার্ডে এক প্রতীকের জন্য একাধিক প্রার্থী আবেদন করলে লটারীর মাধ্যমে তা বরাদ্দ দেয়া হবে।
নগরীর বিশিষ্ট নাগরিক ও ভোটারদের মতামত, এর আগে ৩ বার দলীয় প্রতীক বিহীন সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও মূলত দলীয় ব্যানারেই অনুষ্ঠিত হয়েছে নির্বাচনগুলো। প্রতিটি নির্বাচনে প্রত্যেক দলেরই প্রার্থী মনোনয়ন পেয়ে প্রচারনায় দলীয় কর্মকান্ড ও প্রভাব ছিলো অনেকটাই প্রকাশ্য। বিশ্লেষকদের মতে দলের কর্মকান্ড ও দলের জাতীয় ইস্যুর প্রভাবও ছিলো ভোটের ফলাফলে। তবে এবার প্রকাশ্যে দলীয় প্রতীকে কেমন হবে সিটি নির্বাচন ? দলীয় প্রভাব নাকি ব্যক্তির যোগ্যতা ? কেমন প্রার্থী পছন্দ ভোটারদের ? এমন প্রশ্ন আর আলোচনা নগরীর ভোটারদের মাঝে। নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকার বাসিন্দা রাবেয়া বেগম জানান বিগত ১৫ বছরে ৩ জন সিটি মেয়র নির্বাচন করে এখন বেশ অভিজ্ঞ নগরীর ভোটাররা। দলীয় পরিচিতি কিংবা প্রতীক দেখে আর ভোট নয়। নগরীর উন্নয়নে পরিশ্রমি এবং উদ্যোমী মানষিকতা আছে এমন প্রার্থী চাই। আমাদের প্রত্যাশ্যা টাকা আর দলীয় বড় পদ দেখে ভোট নয়, চাই উদ্যেমী ও পরিশ্রমি মূখ। নগরীর ২৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম বলেন ৩ টি নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা প্রার্থী না থাকলেও প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষাভাবে দলীয় সমর্থন এবং দলীয় সরকার ক্ষমতায় থাকার সকল সুযোগ ব্যবহার করেন সকল প্রার্থীরাই। কিন্তু নির্বাচিত মেয়রদের উন্নয়ন কর্মকান্ড আর প্রতিশ্রুতি অনেকটাই বাস্তবায়ন হয় নাই। ফলে এবার ৪র্থ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হলেও প্রতীক কিংবা দল দেখে ভোট নয়। যোগ্য ও পরিশ্রমী প্রার্থী নির্বাচন করতে চাই।
সরকারী বিএম কলেজের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক মোঃ আকতারুজ্জামান বলেন স্থানীয় নির্বাচনে দলীয় প্রতীক বা প্রার্থীর দলীয় পদ মূখ্য বিষয় নয়। ব্যক্তির যোগ্যতা আর উন্নয়ন কর্মকান্ডের রুপরেখা বিবেচ্য বিষয়। বরিশাল সাংষ্কৃতিক সংগঠন সমন্বয় পরিষদের সভাপতি কাজল ঘোষ বলেন, যিনি নগরীর মেয়র হবেন তাকে বলা হয় নগর পিতা। সুতরাং পিতার কাজটি হলো সকলকে ভালো রাখা। এখানে কে কোন দল বা পদে আছে তা বিবেচনা করা ঠিক নয়। যে প্রার্থী সঠিক ভাবে তার দায়িত্বটি পালন করতে পারবেন ভোটারদের উচিত হবে তাকেই ভোট দেয়া।
বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন ২০০৩ সালে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১ম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে আওয়ামীলীগ সমর্থিত নাগরিক পার্টির প্রার্থী এ্যাড.এনায়েত পীর খানকে পরাজিত করে প্রথম নির্বাচিত মেয়র হন বিএনপির সমর্থিত প্রার্থী এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় সিটি নির্বাচনের স্বতন্ত্র সরদার সরফুদ্দিন সান্টু পেয়েছিলেন ৪৬ হাজার ২০৮ ভোট। আওয়ামীলীগ প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন পেয়েছিলেন ৪৬ হাজার ৭৯৬ ভোট। মাত্র ৫৮৮ ভোটের ব্যাবধানে জয় পেয়েছিলেন শওকত হোসেন হিরন। এ সময় সরকার পরিচালনার দায়িত্বে ছিলো আওয়ামী লীগ। এরপর ২০১৩ সালের নির্বাচনে ৯টি কেন্দ্র বৃদ্ধি পেয়ে ১০০টি কেন্দ্র অনুষ্ঠিত হয় ৩য় বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ভোট গ্রহন। নির্বাচনে টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী শওকত হোসেন হিরন পান ৬৬ হাজার ৭৪১ ভোট এবং আনারস প্রতীক নিয়ে বিএনপি প্রার্থী আহসান হাবিব কামাল ৮৩ হাজার ৭৫১ ভোট। ঐ নির্বাচনে ১৭ হাজার ১০ ভোটের ব্যবধান শওকত হোসেন হিরন পরাজিত হন।
আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন ও দলীয় প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে প্রার্থী ঘোষনা করেছে আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি, বাসদ, কমিউনিষ্ট পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিশ।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT