মেয়র পদে জাপা’র তাপস ও বিদ্রোহী ঝুনুর মনোনয়ন পত্র বাতিল মেয়র পদে জাপা’র তাপস ও বিদ্রোহী ঝুনুর মনোনয়ন পত্র বাতিল - ajkerparibartan.com
মেয়র পদে জাপা’র তাপস ও বিদ্রোহী ঝুনুর মনোনয়ন পত্র বাতিল

6:43 pm , July 1, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ মেয়র পদের জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হয়েছে। গতকাল রোববার রির্টানিং কর্মকর্তা মনোনয়ন পত্র যাচাই-বাছাইকালে বাতিল করেন। ওই দুই প্রার্থী হলো- জাপার মনোনীত প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী বসির আহম্মেদ ঝুনু। প্রাথমিক বাছাইকালে তাপস ঋন খেলাপীর জন্য ও ঝুনুর সমর্থনকারীর স্বাক্ষর জাল থাকার অভিযোগে মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়েছে। দুই প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র বাতিল হওয়া প্রতিদ্বন্ধিতায় টিকে রইলো ৬ প্রার্থী। তারা হলো- বিএনপি’র মনোনীত প্রার্থী এ্যাড. মজিবর রহমান সরোয়ার, আ’লীগের সেরনিয়াবাদ সাদিক আব্দুল্লাহ, সিপিবি এ্যাড. একে আজাদ, বাসদ জেলা সদস্য সচিব ডা. মনিষা চক্রবর্তী, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের মাওলানা ওবায়দুর রহমান মাহাবুব, খেলাফত মজলিসের একেএম মাহাবুব আলম। এছাড়াও সাধারণ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়েছে। তিনি হলেন ৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ জামাল হোসেন নোমান। ঋণখেলাপির দায়ে তার মনোনয়ন পত্র বাতিল করা হয়।
অবশ্য বাতিল ঘোষনা হওয়া মেয়র ও কাউন্সিলর পদের তিন প্রার্থীই মনোনয়নপত্র বাতিল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপীল করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুজিবুর রহমান।
তিনি জানান, প্রধান নির্বাচন কমিশনের ঘোষনা অনুযায়ী গত ২৮ জুন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিলো। শেষ দিন পর্যন্ত মেয়র পদে মোট ৮ জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১১৪ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর পদে মোট ৩৮ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাদের দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই শুরু হয়েছে গতকাল রোববার সকাল থেকে। যা শেষ হবে আজ সোমবার।
রিটার্নিং কর্মকর্তা জানান, প্রথম দিন মেয়র পদে ৮ জনের, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৫টি ওয়ার্ডের এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে’র ৫টি ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই করা হয়। প্রথম দিনের বাছাইতে মেয়র পদে দাখিলকৃত মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই কার্যক্রম শেষ করা হয়েছে। বাছাইতে জাতীয় পার্টির মনোনিত মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস ও পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি বশির আহমেদ ঝুনু’র মনোনয়নপত্র বাতিল করেছে নির্বাচন পরিচালনা কমিটি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস’র বিরুদ্ধে সোনালী বাংকের ঢাকা রমনা শাখায় ঋণের দায় রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইবি প্রতিবেদনে তাকে ঋণখেলাপি বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ইকবাল হোসেন তাপস’র মনোনয়নপত্রটি বাতিল করা হয়েছে।
তিনি বলেন, মনোনয়ন বাতিল হওয়া অপর প্রার্থীর নাম বসির আহমেদ ঝুনু। তিনি জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী হলেও নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী সে স্বতন্ত্র প্রার্থী। নির্বাচনী বিধি মোতাবেক বশির আহমেদ ঝুনু ৩শত জন ভোটারের তালিকা মনোনয়নপত্রের সাথে দাখিল করেছেন। দাখিলকৃত সেই তালিকা থেকে ৫ জন ভোটারকে চিহ্নিত করে তাদের বিষয়ে আমরা খোঁজ খবর নেই। এদের মধ্যে একজন ভোটার নিরক্ষর। কিন্তু সেই ব্যক্তির জাল স্বাক্ষর সম্বলিত ভোটার সমর্থক কপি জমা দিয়েছে। ওই ব্যক্তি আমাদের জানিয়েছে সে টিপ সই দিয়েছেন। কোন স্বাক্ষর করেনি। তাছাড়া ৫ জনের মধ্যে একজন ভোটারকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এ কারনে বশির আহমেদ ঝুনু’র মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার মুজিবুর রহমান।
এর বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআইডি প্রতিবেদন অনুযায়ী নগরীর ৯নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী সৈয়দ জামাল হোসেন নোমান ঋণখেলাপি।
জাপা প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, বিষয়টি নিয়ে একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে দেয়া প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে নির্বাচন কমিশন আমার মনোনয়নপত্রটি বাতিল করেছে। কিন্তু এটা বড় কোন সমস্যা নয়। আমি আপীল কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি নিয়ে সোমবার আপীল করবো। আশাকরি আমার প্রার্থীতার বৈধতা ফিরে পাব।
অপরদিকে জাতীয় পার্টির বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আমি আপীল করবো। কেননা আপীলের জন্য অনেক পয়েন্ট রয়েছে। আশা করছি আপীল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আমি আমার মনোনয়নপত্রের বৈধতা ফিরে পাব।
উল্লেখ্য, গতকাল রোববার মেয়র পদে ৮টি ও সংরক্ষিত ১০টির মধ্যে ৫টি এবং ৩০টি সাধারণ ওয়ার্ডের মধ্যে ১৫টি ওয়ার্ডের সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই সম্পন্ন হয়েছে। আজ সোমবার সংরক্ষিত ৬ থেকে ১০ এবং সাধারণ ১৬ থেকে ৩০ ওয়ার্ডের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই বাছাই সম্পন্ন করা হবে। এর পর আগামীকাল ৩ থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত আপীলের সময় পাবে বাছাইতে বাতিল হওয়া প্রার্থীরা। এর পর ৬ থেকে ৮ জুলাই আপিল নিস্পত্তি এবং ৯ জুলাই প্রার্থীতা প্রত্যাহার ও সর্বশেষ ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পর পরই আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনায় নেমে পড়বেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
এবারের নির্বাচনে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এলাকায় নতুন ও পুরাতন মিলিয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ২ লাখ ৪২ হাজার ১৬৬ জন। যার মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ২১ হাজার ৪৩৬ জন এবং নারী ভোটার সংখ্যা ১ লাখ ২০ হাজার ৭৩০ জন। হিসাব অনুযায়ী বরিশাল সিটিতে এবার নারী ভোটারের তুলনায় পুরুষ ভোটার ৭০৬ জন বেশি।

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন    
সম্পাদক ও প্রকাশক: কাজী মিরাজ মাহমুদ
 
বার্তা ও বানিজ্যিক কার্যালয়ঃ কুশলা হাউজ, ১৩৮ বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গীর সড়ক,
সদর রোড (শহীদ মিনারের বিপরীতে), বরিশাল-৮২০০।
© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed by NEXTZEN-IT