6:45 pm , June 30, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ সিটি নির্বাচনে যে কোন একটি পদের বিপরীতে ভাইয়ের বিরুদ্ধে ভাই অথবা বাবার বিরুদ্ধে ছেলের প্রতিদ্বন্দ্বিতার অনেক ঘটনাই শোনা যায়। কিন্তু এক পরিবার থেকে তিন পদে তিন ভাই বোনের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘটনা খুবই বিরল। তবে এমনই ঘটনা ঘটতে চলেছে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে। এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য এরই মধ্যে মেয়র সহ তিন পদে মনোনয়নত্র জমা দিয়েছেন তিন ভাই বোন। যা শুধুমাত্র প্রার্থীদের নিজ এলাকাতেই নয়, বরং গোটা সিটি এলাকার মানুষের মধ্যেই চমক সৃষ্টি করেছে। সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে একই পরিবার থেকে যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তারা হলেন- নগরীর দক্ষিণ আলেকান্দা মৃধা বাড়ি এলাকার বাসিন্দা আহমেদ আলী’র ছেলে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু, কন্যা সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপি নেত্রী আয়েশা তৌহিদ লুনা ও তাদের ভাই সাধারণ ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মারুফ আহমেদ। যদিও নির্বাচনে তারা চূড়ান্ত ভাবে প্রার্থী হবে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যাবে ৯ জুলাই প্রার্থীতা প্রত্যাহারের দিন অতিবাহিত হওয়ার পরে।
বরিশাল আঞ্চলিক নির্বাচন কমিশন কার্যালয় সূত্রে জানাগেছে, এবারের সিটি নির্বাচনের শুরুতেই কিছুটা নজির স্থাপন করেছেন তিনজন সম্ভাব্য প্রার্থী। যারা একই বাড়িতে থাকেন এবং সম্পর্কে আপন ভাই বোন। তারা তিনজনই সিটি নির্বাচনে মেয়র, সংরক্ষিত এবং সাধারণ ওয়ার্ডের প্রার্থী হয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, মেয়র প্রার্থী বশির আহমেদ ঝুনু বরিশাল সদর উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি ও বরিশাল জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি মেয়র পদে নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য জাতীয় পার্টির মনোনয়ন দাবী করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাকে বাদ দিয়ে জাতীয় পার্টি’র প্রার্থী করা হয়েছে ব্যবসায়ী ইকবাল হোসেন তাপসকে। তার পরেও পার্টির বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন বশির আহমেদ ঝুনু। তবে পার্টির চাপে শেষ পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী মাঠে তিনি টিকে থাকবেন কিনা সে বিষয়টি চিন্তার কারন হয়ে দাড়িয়েছে।
অপরদিকে বিসিসি’র সংরক্ষিত ৪নং (১০, ১১, ১২) ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের লক্ষ্যে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বশির আহমেদ ঝুনুর বোন আয়শা তৌহিদ লুনা। তিনি ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওই ওয়ার্ডের সংরক্ষিত কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাছাড়া বিসিসি’র দ্বিতীয় পরিষদের ওই নির্বাচন পরবর্তী কাউন্সিলরদের ভোটে প্যানেল মেয়র নির্বাচিত হন তিনি। ২০১৩ সালের নির্বাচনে ১১নং ওয়ার্ডের সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে অল্প ভোটে হেরে যান লুনা। তাই এবার চতুর্থ পরিষদ নির্বাচনে পুনরায় সংরক্ষিত ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
এছাড়া ১১নং ওয়ার্ডে সম্ভাব্য প্রার্থী হয়েছেন ঝুনু ও লুনা’র ভাই মারুফ আহমেদ। ১১নং ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ নেতা বজলুর রহমান’র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিলো। কিন্তু দলীয় অনুরোধে তিনি প্রার্থী হননি। যে কারনে ওই ওয়ার্ডে প্রার্থী সংকটের কারনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় কাউন্সিলর নির্বাচিত হতে চলছিলেন বর্তমান কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ সমর্থীত প্রার্থী মজিবর রহমান। যে কারনে শেষ মুহুর্তে ১১নং ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন মারুফ আহমেদ। অবশ্য তিনি ছাড়াও প্রার্থী হিসেবে মো. রাজা নামের অপর একজন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। তার পরও এক বাড়ি এবং একই পরিবার থেকে ৩ ভাই-বোনের মেয়র সহ তিনটি পদে মনোনয়নপত্র দাখিলের ঘটনা নগরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে।