6:10 pm , June 25, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে অংশগ্রহনকারীদের মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন ২৮ জুন। সে অনুযায়ী সম্ভাব্য প্রার্থীদের হাতে আরমাত্র তিন দিন সময় রয়েছে। আর তাই দলের মেয়র প্রার্থী’র পাশাপাশি ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থীদের দলীয় সমর্থন নিশ্চিত করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এখনো সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছেন রাজনৈতিক প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থীরা। দলটির মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত হলেও কোন ওয়ার্ডে কে কাউন্সিলর পদে দলের সমর্থন পাবে সে বিষয়টি এখনো ঝুলে আছে। ফলে ছন্নছাড়া ভাবে একাধিক প্রার্থী নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করে যাচ্ছেন। তাছাড়া সিদ্ধান্তের অভাবে অনেক ওয়ার্ডেই এবার বিএনপি’র কাউন্সিলর প্রার্থী না থাকার আশংকাও করছেন তৃনমুল নেতা-কর্মীরা।
জানাগেছে, গত ১৩ জুন থেকে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের অংশগ্রহনে ইচ্ছুক সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়পত্র সংগ্রহ শুরু করেন। ৩০ নির্বাচনের ভোট গ্রহনকে সামনে রেখে ২৮ জুনের মধ্যে মনোনয়ন দাখিল করতে হবে প্রার্থীদের। ১ ও ২ জুলাই মনোনয়নপত্র যাচাই বাচাই এবং ৯ জুলাই প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর আগে আপিলের সুযোগ পাবে প্রার্থীরা। ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দের পর পরই আনুষ্ঠানিক প্রচার প্রচারনায় নেমে পড়বে চুড়ান্ত প্রার্থীরা।
নির্বাচনী এই কার্যক্রমকে সামনে রেখে নগরীর ৩০টি ওয়ার্ডের মধ্যে ২৮টি সাধারণ এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী চুড়ান্ত এবং তাদের নাম প্রকাশ করেছে আওয়ামী লীগ। এর আগে দলের সমর্থন প্রত্যাশিদের কাছ থেকে আবেদন গ্রহন করে তারা। কিন্তু বিরোধী দল বিএনপিতে এ ধরনের কোন কার্যক্রমই নেই এমনকি কারা নির্বাচন করবে এবং কাদের সমর্থন জানানো হবে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট দিক নির্দেশনাও দিচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা।
ওয়ার্ড পর্যায়ে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ৩০টি সাধারণ ও ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনের জন্য একাধিক প্রার্থী রয়েছেন। যারা সবাই দলের সমর্থন চাচ্ছেন। তাদের মধ্যে অনেকেই নির্বাচন কমিশনের মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন। কিন্তু কেউ জমা দেননি। তারা সবাই দলের হাই কমান্ডের নির্দেশনার অপেক্ষায় আছেন। পাশাপাশি মেয়র পদে দল থেকে কাকে মনোনয়ন দেয়া হবে এতো দিন সেই সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় ছিলেন বিএনপি’র নেতারা। এরই মধ্যে বিএনপি’র মেয়র প্রার্থী চুড়ান্ত হলেও এখনো ঝুলে আছে কাউন্সিলর পদে দলের প্রার্থী সমর্থনের বিষয়টি।
অবশ্য দলের বিভিন্ন মাধ্যমে জানাগেছে, বিএনপি’র সম্ভাব্য প্রার্থী আগে থেকেই নির্ধারন হয়ে আছে। হয়তো কয়েকটি ওয়ার্ডে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে বিসিসি’র বিএনপি পন্থি যে কাউন্সিলররা আছেন তাদের সবাইকেই বিএনপি’র সমর্থন দেয়া হবে। সে হিসেবে বিসিসি’র প্রায় ২০টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী চুড়ান্ত হয়ে আছে। বাকি ১০টি ওয়ার্ডে প্রার্থী থাকলেও এখন পর্যন্ত কেউ দলের সমর্থন নিশ্চিত হননি।
একাধিক কাউন্সিলর প্রার্থীদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, আমরা নির্বাচনের জন্য মানুষিকভাবে প্রস্তুত আছি। বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার’র দিক নির্দেশনা পেলেই আমরা নির্বাচনের প্রচার প্রচারনায় নামতে পারি। কিন্তু তিনি এখন পর্যন্ত প্রার্থী হিসেবে কারোর নাম প্রস্তাবনা করেননি। মজিবর রহমান সরোয়ারের দিক নির্দেশনা পেলেই তারা মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমা দিবেন বলে জানিয়েছেন।
আবার কিছু কিছু কাউন্সিলর প্রার্থী ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা বলেন, সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় শেষ পর্যন্ত দল থেকে একাধিক প্রার্থী দাড়াতে পারে। সে ক্ষেত্রে দলীয় প্রার্থীর বিষয় অনিশ্চিত হয়ে দাড়াবে। তাছাড়া সবাই ছন্নছাড়া ভাবে মনোনয়ন সংগ্রহ করছে। এতে অর্থনৈতিক সমস্যায়ও পড়তে হচ্ছে দলের নেতা-কর্মীদের। যে কারনে দ্রুত ওয়ার্ড পর্যায়ে দলের প্রার্থী ঘোষনার দাবী তুলেছেন তারা।
বিএনপি’র যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার বলেছেন, বরিশাল বিএনপি’র দুর্গ। এখানে আমাদের ভোট নিয়ে চিন্তার কারন নেই। সুষ্ঠু ভোট হলে পূর্বের ন্যায় প্যানেল সহকারেই আমরা বিজয়ী হব জানিয়ে তিনি বলেন, কাউন্সিলর প্রার্থীদের বিষয়টি নিয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। নেতা-কর্মী এবং সম্ভাব্য প্রার্থীদের মনোনয়ন সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে দলের প্রার্থীদের নাম ঘোষনা করা হবে।