6:00 pm , June 24, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ আবারো রাজনীতিতে পরিক্কতার প্রমান দিলেন তারুন্যের প্রতীক বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বিজয়ী সাদিক নির্বাচনী আচরনবিধির প্রতি সম্মান জানিয়ে নিরবেই বরিশালে ফিরেছেন। নগরবাসির ভোগান্তির কথা ভেবে অধীর আগ্রহে থাকা নেতা-কর্মীদের অজান্তেই গতকাল রোববার দুপুরে বিমান যোগে বরিশালে আসেন তিনি। একজন তরুন নেতা হলেও রাজনীতিতে তার কৌশল, দক্ষতা, বুদ্ধিমক্তা, বিশেষত্ব ও মননশীলতা প্রমান করে সাদিক আবদুল্লাহ’র রক্তে-মাংশে দাদা-বাবা’র রাজনীতি মিশে আছে। তাছাড়া দলের মনোনয়ন নিয়ে হঠাৎ করেই সাদিকের বরিশালে নিরব আগমনকে চমক হিসেবেও দেখছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা।
সূত্রমতে, বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের হাল ধরার পর থেকেই একের পর এক রাজনীতিতে পরিক্কতার প্রমান দিয়ে আসছেন সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ। একটি ঐতিহ্যবাহী আওয়ামী ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান সাদিক তার রাজনৈতিক পরিপক্কতার কারনে হয়েছেন পুরস্কৃত। মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র শওকত হোসেন হিরন’র মৃত্যুত্যে ‘হ য ব র ল’ পরিস্থিতে পৌছানো আওয়ামী লীগকে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ ফিরিয়ে নিয়ে আসেন মূল কাঠামোতে। একজন যুব নেতা হয়েও দাবা-বাবার কাছ থেকে শেখা রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা দিয়ে বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগকে একটি শক্ত অবস্থানে নিয়ে আসেন তিনি। মাত্র চার বছরের ব্যবধানে সাদিকের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয় তৃনমুল আওয়ামী লীগ। শুধু তাই নয়, সাদিকের জনপ্রিয়তা নিজ দল ছাপিয়ে পৌছে যায় সাধারণ মহলে। যুবনেতার দক্ষতায় বিস্মিত হন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। তাইতো রাজনৈতিক পরিপক্কতার পুরস্কার স্বরুপ মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক করা হয় তাকে।
এদিকে আসন্ন বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে সামনে রেখে ইতিপূর্বে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীই দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন বয়জ্যেষ্ঠ নেতাও। কিন্তু তাদের মধ্যে থেকে সাদিকেই ভরসা খুঁজে পান বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ সহ তৃনমূল এবং অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। তাকেই দল থেকে মনোনয়ন দেয়ার জোর দাবী জানান আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে। সকল আলোচনার অবসান ঘটিয়ে সাদিক আবদুল্লাহর উপর ভরসা করেন দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। যার ফলশ্রুতিতে বরিশাল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক তুলে দেন সাদিকের হাতে। যে কারনে দলের মনোনয়ন পাওয়ায় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের পাশাপাশি মনোনয়ন বিজয়ের সবটুকু অবদান তৃনমুল নেতা-কর্মীদেরকেই দিয়েছেন সাদিক আবদুল্লাহ। তবে তৃনমুলের দাবী সাদিক আবদুল্লাহ একজন তরুন নেতা হয়েও রাজনীতিতে যে পরিপক্কতার নজির স্থাপন করেছেন তারই পুরস্কার আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন। প্রধানমন্ত্রী যে ভরসা করে সাদিক আবদুল্লাহকে নৌকার হাল ধরিয়েছেন সিটি নির্বাচনে বিজয়ের মাধ্যমে সেই আশার বাস্তবায়ন ঘটাবেন তিনি বলে দাবী করেছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
অপরদিকে সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ দলের মনোনয়ন পাওয়ায় উল্লাসে ফেটে পড়ে বরিশাল জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। তাকে মনোনয়ন দেয়ায় শুকরানা আদায়ে নগরীর মসজিদে মসজিদে দোয়া-মোনাজাত হয়। নেতা-কর্মীরা আনন্দ মিছিল এবং মিষ্টি বিতরন করেন সাধারণ মহলে। পাশাপাশি সাদিককে নিয়ে আশায় স্বপ্ন বাঁধতে শুরু করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। মনোনয়ন নিয়ে বরিশালে ফেরার পর পরই সাদিক আবদুল্লাহকে নিয়ে নগরময় শোডাউন এবং আনন্দ উল্লাস করার পরিকল্পনা ছিলো তাদের। কিন্তু নেতা-কর্মীদের সেই স্বপ্ন পুরন না হলেও তাদের চমক দেখিয়েছেন সাদিক আবদুল্লাহ। মনোনয়ন নিয়ে বরিশালে ফিরেছেন ঠিকই। কিন্তু তার বরিশালে ফেরার বিষয়টি জানেননি কেউ। সকলের অজান্তে নিরবেই বিমান যোগে গতকাল রোববার বেলা ১২টার দিকে ঢাকা থেকে রহমতপুর বিমানবন্দর এবং সেখান থেকে সোজা নগরীর কালিবাড়ি রোডে সেরনিয়াবাত ভবনে পৌছান তিনি। এসময় কালিবাড়ির রোডের বাড়িতে সাদিক আবদুল্লাহকে দেখে অনেকটা হতবাক এবং চমকে যান সেখানে উপস্থিত থাকা নেতা-কর্মীরা।
মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও বিসিসি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা আমার উপর বিশ্বাস করে যে দায়িত্ব অর্পন করেছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ। জননেত্রীর দেয়া বিশ্বাস অক্ষুন্ন রাখতে যা করনীয় আমি তাই করবো। তাছাড়া আমার প্রতি দলের নেতা-কর্মীদের ভালোবাসার যে বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে তাতে আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে নিয়ে তাদের অনেক আশা ছিলো। কিন্তু নির্বাচনী আচরন বিধির প্রতি সম্মান দেখিয়ে এই মুহুর্তে নেতা-কর্মীদের সেই আশা পুরন করতে দেইনি। তবে নেতা-কর্মীদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা এবং বিশ্বাস সব সময় থাকবে। তাছাড়া আমার বরিশালে আগমনের বিষয়টি নেতা-কর্মীরা পূর্বে জানতে পারলে তারা অবশ্যই আমাকে সংবর্ধনা জানাতে বিমানবন্দরে থাকতো। তাতে জনদুর্ভোগ বাড়তো। সড়কে যানজট সৃষ্টি’র পাশাপাশি নির্বাচনী আচরনবিধি লঙ্ঘন হতো। তাই কোন প্রকার আগাম ঘোষনা ছাড়াই একাকি বরিশালে এসে পৌছেছি। আপাতত নেতা-কর্মীদের ধৈর্য্য ধারনের পাশাপাশি নৌকার বিজয়ের জন্য নেতা-কর্মীদের ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।