6:19 pm , June 6, 2018

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ এপিবিএন-১০ এর হাতে ইয়াবা সহ আটক হওয়া সোর্সকে ছিনতাই চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে কাউনিয়া থানার এক এএসআই’র বিরুদ্ধে। এতে বাঁধা দিতে গেলে এপিবিএন’র অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া এসআই’র সাথে অসৌজন্যমুলক আচারন করে ওই এএসআই। তবে কাউনিয়া থানা পুলিশ ইয়াবা সহ এএসআই’র সোর্স আটক ও ইয়াবা ছিনতাই’র অভিযোগ অস্বীকার করে। অবশ্য থানা পুলিশ ঘটনাটি এড়িয়ে যাবার চেষ্টা করলেও রাতে বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানায় বিএমপি পুলিশের উর্ধ্বতন কমকর্তাদের বৈঠক করতে দেখা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পূর্বে থেকে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান এর একটি টিম নগরীর ৬নং ওয়ার্ডস্থ দপ্তরখানা এলাকাধিন সাগর গলিতে অভিযান পরিচালনা করেন। পরবর্তীতে রাতে ওই এলাকা থেকে ৩০ পিস ইয়াবা সহ স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী অভিকে আটক করে এপিবিএন’র ওই টিম। ইয়াবা সহ আটক হওয়া মাদক ব্যবসায়ী অভি সাগরগলী এলাকার মৃত শাহজাহান মিয়ার ছেলে বলে জানাগেছে।
এদিকে অভিকে আটকের খবর পেয়ে হঠাৎ করেই ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন কাউনিয়া থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) জিয়া। মুহুর্তের মধ্যেই সে প্যাকেটে থাকা ৩০ পিস ইয়াবা ছিনিয়ে নেয়। বাঁধা দিতে গেলে বিষয়টি নিয়ে এপিবিএনের এসআই ও পুলিশের এএসআই’র মধ্যে বাক বিতন্ডা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে অভিযানের নেতৃত্ব দেয়া এপিবিএন-১০ এর অপস এন্ড ইন্টিলিজেন উইং এর উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. শফিকুল ইসলাম জানান, কাউনিয়া থানার এএসআই জিয়া ঘটনাস্থলে এসে কিছু বুঝে না উঠতেই অভির কাছ থেকে উদ্ধারকৃত ৩০ পিস ইয়াবা ছিনিয়ে নেয়। শুধু তাই নয়, আটক হওয়া অভিকেও ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে এএসআই জিয়া। এতে বাঁধা দিতে গেলে সে উত্তেজিত হয়ে যায়। এমনকি এপিবিএন’র ওই এসআই পরিচয় দেয়ার পরেও কাউনিয়া থানার এএসআই জিয়া তার সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
এপিবিএন’র এসআই শফিকুল ইসলাম বলেন, ইয়াবা ছিনতাই’র পর পরই আটক অভিকে আমরা জিজ্ঞাসা করি। তখন সে আমাদের জানায় যে, কাউনিয়া থানার ওই এএসআই জিয়া’র সোর্স হিসেবে সে কাজ করে। তার কাছ থেকে যে ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে তা এএসআই জিয়াই বিক্রির জন্য দিয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরেই সে এএসআই জিয়ার সোর্স হিসেবে ইয়াবা বিক্রি করে আসছে বলে আমাদেরকে মাদক ব্যবসায়ী অভি জানিয়েছে।
এসআই শফিক বলেন, বিষয়টি তাৎক্ষনিক ভাবে তাদের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানান। এমনকি কোতয়ালী এবং কাউনিয়া থানা পুলিশও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। পরে রাতে বিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী থানায় সত্যতা যাচাইয়ে সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষ গ্রহন করা হয়।
এদিকে ঘটনার সত্যতা জানতে কাউনিয়া থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) মো. নূরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তুএ ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি বলে দাবী করেন তিনি। কিন্তু কোতয়ালী থানায় গিয়ে ঘটনার সত্যতা খুঁজে পাওয়া যায়। সেখানে দেখা যায় সহকারী পুলিশ কমিশনার এর কক্ষে ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ে সংশ্লিষ্টদের স্বাক্ষ গ্রহন করছেন উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) মো. হাবিবুর রহমান। এসময় সেখানে কোতয়ালী মডেল থানার সিনিয়র সহকারী কমিশনার শাহনাজ পারভীন এবং কাউনিয়া থানার ওসি সহ পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত দরজা বন্ধ করে থানায় পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত থাকায় তাদের কারোর বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।