6:22 pm , June 5, 2018
নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঈদ বাজারের ক্রেতা ও তাদের বহনকারী যানবাহন বৃদ্ধির প্রভাবে নগরীতে শুরু হয়েছে অসহনীয় যানযট। নগরীর প্রধান প্রধান সড়ক ও এলাকায় যানযটে পায়ে হেটে চলা কষ্টকর হয়ে উঠছে। দিনের কয়েকটি ব্যস্ত সময়ে যানযটে যাত্রী ও চালকরা দুর্ভোগে পড়ে। যানজট নিয়ন্ত্রনে আনতে হাপিয়ে উঠে খোদ ট্রাফিক পুলিশরাও। যানবাহন নিয়মতান্ত্রিকভাবে চলাচলে ট্রাফিক পুলিশের সকল পদক্ষেপ সন্তুস্ট করতে পারছে না সাধারন মানুষকে। সাধারনের চোখে এই নিয়মতান্ত্রিকতা শুধুমাত্র কিছু বিশেষ শ্রেনির যানবাহনের জন্য। নগরী জুড়ে যানজট সৃষ্টিকারী অবৈধ আলফা, মাহেন্দ্রা, ব্যাটারিচালিত অটো রিক্সা, সিএনজি চালিত অটোরিক্সা নিয়ে তাদের ট্রাফিক পুলিশের কোন ভ্রুক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ করেছে পথচারীরা। অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশ জানিয়েছে সকল অবৈধ যানের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত আছে ও থাকবে। এছাড়া নগর জুড়ে যান চলাচলে নিয়মতান্ত্রীকতা আনার চেষ্ঠা অব্যাহত আছে। বিশেষ করে থ্রি হুইলার চলাচলের সঠিক নিয়মে আনতে নগরীর বিভিন্ন স্থানে ট্রাফিক বিভাগ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ঈদের আগে নগরীর যানযট মুক্ত রাখতে ট্রাফিক বিভাগ যথাযত পদক্ষেপ গ্রহন করবে বলেও জানিয়েছে বিভাগের দায়িত্বরত কর্তা। এছাড়াও মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশের বলে যানজট নিরসনে জেলাখানা মোড় থেকে জিলা স্কুল মোড় এবং সদর রোড সংযোগ সড় গীর্জা মহল্লা, ফজলুল হক এভিনিউ, চক বাজার থেকে সিটি কর্পোরেশন ভবন পর্যন্ত সড়কে উচ্চ শব্দকারী ডিজেল চালিত আলফা মাহিন্দ্র, রিও, অতুল ম্যাক্সি, পিয়াজিও ব্রান্ড’র তিন চাকার যানবাহন বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। যা আজ থেকে শুরু হবে। পরবর্তি নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত ওই আদেশ বলবৎ থাকবে।
যানযট সহ নগরীতে চলাচলের বিড়ম্বনার বিষয়ে বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখে পথচারী-যানচালকদের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, নগরীর প্রধান এলাকা শহিদ মিনারের সামনে থেকে নাজির পুল পর্যন্ত, ফজলুল হক এভিনিউ থেকে নগর ভবন এর সামনে পর্যন্ত, নগর ভবন থেকে ফলপট্টি মোড় পর্যন্ত, গীর্জা মহল্লার মতো এলাকায় ঈদ বেচাকেনা বেলা ১২টার পর থেকে ও সন্ধ্যার পর থেকে হেটে প্রবেশ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। ছোট নগরীর ক্ষুদ্র এই দুরত্ব পার হতে হেটে যেতেও বেগ পেতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পথচারীরা। যানবাহন নিয়ে প্রবেশ করা তো প্রায় অসাধ্য সাধনে পরিনত হয়েছে। একবার প্রবেশ করলে লম্ব সময় একইস্থানে কাটাতে হচ্ছে। এছাড়া কেউ কারও তোয়াক্কা না করে যানযহন চালানোয় দুর্ঘটনা তো খুব স¦াভাবিক বিষয়ে পরিনত হয়েছে। এই যানযটের মুল কারন হিসেবে অভিযোগকারীরা দায়ী করেছেন থ্রি হুইলার এর যেমন ইচ্ছা বেপরোয়া চলাচলকে। নগরীতে এই থ্রি হুইলার গুলো এখন বেদম বেপরোয়া যানবাহনে পরিনত হয়েছে। ঈদ সামনে চলে আসায় বেরেছে যাত্রী সংখ্যা। এই যাত্রী পরিবহনে নগরীর পুরো প্রধান এলাকা জুড়ে এখন চলছে থ্রি হুইলারের পথ আটকে চলাফেরা। শুধু নগরীর ই নয়, অতিরিক্ত আয়ের আশায় এখন নগরীর আশপাশের থ্রি হুইলার গুলো এসে নগরীতে যাত্রী পরিবহন করছে। সাধারন পথচারীরা আরো জানায়, এই থ্রি হুইলার এমন বেপরায়া নিয়মবিহীন চলাচলের দিকে অনেকটাই বেখেয়ালী ট্রাফিক কর্তারা। তাদের ব্যস্ততা শুধুমাত্র মোটর সাইকেল আরোহিদের নিয়ে।
এ বিষয়ে এক মাহিন্দ্রা চালক ও ইউনিয়নের নেতার সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, নগরীতে বর্তমানে শুধুমাত্র মাহেন্দ্রা আলফাই আছে দুই হাজারের অধিক। এর পরে আরও রয়েছে নানা ধরনের থ্রি হুইলার। ঈদে কেনাকাটা করতে আসা লোকজন এই যানবাহন নিয়ে নগরীর আশপাশ এর বিভিন্ন স্থান থেকে আসে। এসকল যানবাহন শুধুমাত্র কিছু এলাকায় প্রবেশের নিষেধাজ্ঞা মানলেও এক রকম বেপরোয়া ভাবেই দাপিয়ে রেড়ায় নগরজুরে বলে স্বীকার করেন ওই চালক। এতে করে যানযট সৃস্টি হয়, ঘটে ছোট বড় দুর্ঘটনা। তবে ট্রাফিক বিভাগকে বিট দিয়ে চলে বিধায় তাদের সব কিছু তোয়াক্কা করে চলতে হয়না বলেও সিকার করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মাহিন্দ্রা চালক ও ইউনিয়নের নেতা। বর্তমানে নগরীতে যে পরিমান থ্রি হুইলার আছে তা থেকে অবৈধ বাদ না দিয়ে চলাচলে সিমাবদ্ধতা তৈরি করে যানযট কমানো যাবে না বলেন তিনি। শুধুমাত্র এক স্থানের যানযট অন্য স্থানে সরানো ছারা এর কোন উপকারীতা নেই বলেন তিনি। প্রধান প্রধান এলাকায় কয়েক দিনের জন্য প্রবেশ বন্ধ করা হবে কিন্তু সেই যানযট ছরাবে গোটা নগরীতে। কারন বেচে থাকতে হলে বৈধ হোক অবৈধ হোক চালকদের রাস্তায় উপার্যনের জন্য নামতেই হবে বলেন তিনি।
ট্রাফিক এর উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল জানান, শুধুমাত্র ঈদেই নয়, নগরী যানযট মুক্ত রাখতে ট্রাফিক বিভাগ সর্বদা সচেস্ট। ইতি মধ্যে নগরীর ফোর লেন এলাকায় থ্রি হুইলার চলাচল নিয়ন্ত্রনে আনতে অতিরিক্ত জনবল ব্যাবহার করছে ট্রাফিক বিভাগ। ফোর লেন এলাকায় থ্রি হুইলার চলাচল নিয়ন্ত্রন করা হয়েছে। সকল স্থানেই অচিরেই তা করা হবে জানান তিনি। অবৈধ সকল প্রকার যানবাহনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে ট্রাফিক বিভাগ। ঈদের আগে যাযট কমিয়ে সাধারনের চলাচল সুবিধাযনক করতে ইতিমধ্যে সকল ব্যস্ত এলাকা যেমন, চকবাজার, কাটপট্্ির এলাকায় যান চলাচল সীমাবদ্ধ করা হয়েছে। ২০ রমজানের পর থেকে তা আরও সীমাবদ্ধ করা হবে জানান তিনি। ইতিমধ্যে তা শহরজুরে মাইকিং করে যান চালকদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে বলেও জানান ট্রাফিক এর উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তম কুমার পাল।