6:05 pm , June 4, 2018
রুবেল খান ॥ ঈদ উপলক্ষে বরিশাল-ঢাকা সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে দুরপাল্লার রুটের প্রায় অর্ধশত নৌ যান যাত্রী পরিবহন করবে। বিশেষ করে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে বিশেষ ঈদ সার্ভিসের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে সরকারি এবং বেসরকারি সংস্থার ৩৩টি নৌযান। যার মধ্যে রাষ্ট্রিয় বিআইডব্লিউটিসি’র ৬টি নৌযান রয়েছে। এর মধ্যে ২২ বেসরকারি লঞ্চ সরাসরি বরিশাল-ঢাকা রুটে চললেও বাকিগুলো বরিশাল ভায়া হয়ে চলবে। অবশ্য বিশেষ সার্ভিসে মোট নৌযানের সংখ্যা আরো বাড়লেও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।
এদিকে এবারের ঈদ সার্ভিসে প্রথম যাত্রী সেবায় যুক্ত হচ্ছে দেশের সর্ববৃহৎ ও সর্বাধুনিক বিলাশবহুল নৌযান এমভি কীর্তনখোলা-১০ সহ তিনটি নৌযান। কীর্তনখোলা-১০ এরই মধ্যে যাত্রী সেবায় যুক্ত হলেও আগামী ৭ জুলাই থেকে যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে দিবা ও রত্রিকালিন সার্ভিসের দুটি এমভি এ্যাডভেঞ্চার ৯ ও ৬। ঈদকে সামনে রেখে এরই মধ্যে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে রোটেশন নিয়মের বাইরে গিয়ে চলাচল শুরু করেছে দেশের সর্বাধুনিক ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির নৌযান এমভি কীর্তনখোলা-১০। শুধু তাই নয়, চলাচল শুরু করা কীর্তনখোলা-১০ দেশের সর্বোবৃহৎ যাত্রীবাহী নৌযান হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে।
এদিকে শুধু কীর্তনখোলা-১০ নয়, এবারের ঈদ ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধনিক প্রযুক্তি ও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা নির্ভর এবং লিফ্ট যুক্ত একমাত্র যাত্রীবাহী নৌযান এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৯ ও দিবা সার্ভিসের ক্যাটামেরন টাইপের এ্যাডভেঞ্চার-৬। এ দুটি নৌযানই আগামী ৭ জুন থেকে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করবে। সে অনুযায়ী এবারের ঈদ যাত্রায় নুতন করে যুক্ত হচ্ছে তিনটি আধ্যাতুনিক ও বিশালবহুল নৌযান। হিসেব অনুযায়ী সরকারি এবং বেসরকারি মিলিয়ে সরাসরি বরিশাল-ঢাকা ও ভায়া রুটে বিশেষ সার্ভিস দিবে ৩৩টি নৌযান। এমন তথ্যই জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের সংশ্লিষ্টরা। এর বাইরে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন স্থান হতে আরো ১৫টির মত যাত্রীবাহী লঞ্চ ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট সূত্র।
বিআইডব্লিউটিসি’র বরিশাল কার্যালয়ের সহকারী মহা-ব্যবস্থাপক সৈয়দ আবুল কালাম আজাদ জানান, এবারের ঈদ সার্ভিসে যাত্রী সেবায় যে ৬টি জাহাজ থাকবে। এগুলো সেগুলো হলো পিএস মাহসুদ, পিএস অষ্ট্রিজ, পিএস টার্ন, পিএস লেপচা, এমভি মধুমতী এবং এমভি বাঙ্গালী। ১৩ জুন থেকে ১০ দিন ওই জাহাজ বিশেষ সার্ভিস দিবে। ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা জাহাজগুলো বরিশাল হয়ে মোড়লগঞ্জ পর্যন্ত যাবে। সেখান থেকে বরিশাল হয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে জাহাজগুলো।
ওদিকে বিআইডব্লিউটিএ’র নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, এবারের ঈদে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে নুতন ও পুরাতন মিলিয়ে সরাসরি ২২টি লঞ্চ চলাচল করবে। এছাড়া বরিশাল ভায়া হয়ে চলাচল করবে আরো ৫টি লঞ্চ। তবে এসব লঞ্চ যাত্রী বোঝাই থাকলে সেগুলোকে বরিশাল নৌ বন্দরে নোঙ্গর করতে দেয়া হবে না।
সরাসরি বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে যেসব লঞ্চ বিশেষ সার্ভিস দিবে সেই লঞ্চগুলো হলো- এমভী কীর্তনখোলা-১০, এমভি কীর্তনখোলা-২, এমভি সুন্দরবন-৮, ১০ ও ১১। সেই সাথে পটুয়াখালী-ঢাকা রুটে চলাচলকারী এমভি সুন্দরবন-৯ লঞ্চটিও অনুমতি সাপেক্ষে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে ঈদের বিশেষ সার্ভিসে যুক্ত হতে পারে।
এছাড়া ঈদ সার্ভিসে থাকবে- সুরভী ৭, ৮ ও ৯, এমভি পারাবত-৮, ৯, ১০ ও ১২, এমভি ফারহান-৮, এমভি টিপু-৭, এমভি কালামখান-১, দীপরাজ থেকে নুতন নামকরন হওয়া এমভি কালাম-১, এ্যাডভেঞ্চার-১ ও ৯। এগুলো সব রাত্রিকালিন সার্ভিসের লঞ্চ। দিবা সার্ভিসে ঈদ যাত্রা করবে এমভি এ্যাডভেঞ্চার-৬, এমভি গ্রীন লাইন-২ ও ৩।
ঢাকা-তুষখালী ভায়া বরিশাল রুটের এমভি পূবালী, এমভি রেডসান, ঢাকা-ঝালকাঠি ভায়া বরিশাল রুটে চলাচল করবে এমভি সুন্দরবন-১২, ফারহান-৭, পটুয়াখালী-ঢাকা ভায়া বরিশাল রুটের এমভি আওলাদ, এমভি ঈগল, এমভি মানিক সহ দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরাসরি ঢাকা রুটে আরো অন্তত ১৫টির মত লঞ্চে ঈদে বিশেষ সার্ভিস দিবে। অবশ্য এর বাইরে নুতন করে কোন লঞ্চ ঈদ সার্ভিসে যুক্ত হলেও হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে ঢাকা থেকে বিশেষ অনুমতি নিতে হবে বলে জানিয়েছেন নৌ নিটার সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
অপরদিকে এবারের ঈদ সার্ভিসে থাকছে না কীর্তনখোলা-১, এমভি দেশান্তর এবং তাসরিফ। এ লঞ্চগুলোর মধ্যে লোকশানের কারনে বরিশাল-ঢাকা নৌ রুট থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে এমভি দেশান্তর। কীর্তনখোলা-১ ডকে এবং তাসরিফও অন্য রুটে চলাচল করছে বলে জানাগেছে।